ঢাকা ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তেলের ঘাটতি কমাতে বাড়ছে সরিষা আবাদ

তেলের ঘাটতি কমাতে বাড়ছে সরিষা আবাদ

দেশের ভোজ্য তেলের ঘাটতি কমাতে সরকারের মহা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শরীয়তপুর জেলায় বেড়েছে সরিষার আবাদ। গত মৌসুমের তুলনায় এবার শরীয়তপুরের ৬ উপজেলায় ৪ হাজার ১৩০ হেক্টরের অধিক জমিতে স্থানীয় জাতসহ উফশী জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে জেলার কৃষি রাজধানীখ্যাত জাজিরা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে। ২০২৫ সালের আগেই জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা ৪০ শতাংশ তেল ফসল উৎপাদন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।

শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ তেল ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছে শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। তেল ফসলের উৎপাদন বাড়াতে কৃষি বিভাগ মাঠপর্যায়ে ব্লকভিত্তিক বোরো শস্য বিন্যাসের মাধ্যমে আগাম জাতের অন্তর্ভুক্তি করে সরিষার আগের জাতের চেয়ে অধিক তেল উৎপাদনকারী জাত আবাদ প্রক্রিয়া গতিশীল রয়েছে। এরই মধ্যে বারি-১৮, বারি-১৪, বারি-১৭,  বিনা-৪ ও বিনা-৯ জাতের সরিষার আবাদ জাত ভেদে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে জাজিরা উপজেলায় ৩ হাজার ৪৫০, সদরে ৩ হাজার ১৬০, নড়িয়ায় ২ হাজার ৫৬৫, ভেদরগঞ্জে ২ হাজার ৪৯০, গোসাইরহাটে ১ হাজার ৬৪৮ ও ডামুড্যায় ৯১৭ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে, যা গত মৌসুমের তুলনায় এবার শরীয়তপুরের ছয় উপজেলায় ৪ হাজার ১৩০ হেক্টর বেশি।

নড়িয়া উপজেলার কৃষক লিটন মালত বলেন, গত মৌসুমে ১ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা আবাদ করে ৮ মন ফলন পেয়েছিলাম। এবার ৪ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা আবাদ করেছি। আশা করছি বিঘায় ফলন ৮ মনের কম হবে না।

জাজিরা উপজেলার বিকেনগর ইউনিয়নের কৃষক গিয়াস উদ্দিন মোল্লা বলেন, ২ বছর আগে তিন বিঘা জমিতে মাঘি জাতের সরিষা আবাদ করে ১৩ মন ফলন পেয়েছিলাম। গত বছর কৃষি বিভাগের পরামর্শে ৩ বিঘা জমিতে উফশী বারি-৪ জাতের সরিষা আবাদ করে ২৩ মন ফলন পেয়েছিলাম। মাঘি জাতের সরিষার এক ঘাইনে (১০) কেজি সাড়ে ৩ কেজি তেল পেতাম। এখন বারি-১৪ জাতের সরিষায় এক ঘাইনে তেল সাই সাড়ে ৪ কেজি। এতে ফলনও বেশি, তেলও বেশি। এখন আর বাজার থেকে বেশি দাম দিয়ে খাবার তেল কিনতে হবে না, বিক্রিও করতে পারব।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. রবিআহ নুর আহমেদ বলেন, সরকারের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভোজ্য তেলের ঘাটতি কমাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মাঠপর্যায়ে আমরা কাজ করছি। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উৎপাদন বাড়াতে প্রণোদনা কর্মসূচি, তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প, রাজস্ব কর্মসূচি ও এনএটিপি-২ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করাসহ প্রদর্শনী স্থাপন করে বৃদ্ধি করা হয়েছে অধিক তেল উৎপাদনকারী সরিষার আবাদ। গত মৌসুমের তুলনায় এ বছর শরীয়তপুরে ৪ হাজার ১৩০ হেক্টর অধিক জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আমরা আশা করছি, ২০২৫ সালে আমরা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অনেক দূর এগিয়ে যাব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত