বৃদ্ধ মুনছুরের সংসার চলে রিকশা চালিয়ে
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আব্দুল কাফি সরকার, গাইবান্ধা
বৃদ্ধ মুনছুর আলী। বয়সের ভারে কমেছে শারীরিক শক্তি। বাসা বেঁধেছে নানা রোগে। তিন যুগ ধরে রিকশার প্যাডেল চালিয়ে ভাত ও ওষুধের খরচ যোগাতে হচ্ছে তাকে। কিছুক্ষণ প্যাডেল ঘুরালে যেন দম আটকে যায় তার। তবুও থেমে নেই জীবনযুদ্ধ। এই রিকশা দিয়ে যেটুকু উপার্জন হয় তা দিয়ে চলে মুনছুরের সংসার। মুনছুর আলীর বাড়ি গাইবান্ধার সাদুলাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের শালাইপুর গ্রামে।
জানা যায়, একদম ছিন্নমূল পরিবার মুনছুর আলীর। স্ত্রী-ছেলে ও তিন মেয়েসহ ৬ সদস্যের সংসার। অন্ন-বস্ত্র যোগাতে তিন চাকার রিকশায় সহায় সম্বল তার। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে হাতে হ্যান্ডেল আর পায়ে প্যাডেল মেরে রিকশা চালিয়ে কোনোমতে জীবিকা নির্বাহ করে চলেছেন। কয়েক বছর আগে তার রিকশা রেখে নামাজে গেলে চুরি হয়ে যায় সেটি। ফলে থমকে যায় জীবনযুদ্ধ। এরই মধ্যে গাইবান্ধার এক চিকিৎসক কিনে দেন আরেকটি রিকশা। তবে সেটি কোনো ব্যাটারিচালিত নয়। তবুও জীবিকার তাগিদে পায়ে প্যাডেল মেরে যাত্রী বহনে অবিরত চালিয়ে আসছেন।
মনছুর আলী জানান, ভূমিহীন ব্যক্তি তিনি। বয়সও এখন বার্ধক্য। ঝুঁকিপূর্ণ ঘরে বসবাস। সীমিত আয়-রোজগারে স্ত্রীকে নিয়ে কোনোভাবে বেঁচে আছেন। মোসলেম আলী নামের এক শিক্ষক জানান, মুনছুর আলী যে বয়সে অবসর সময় কাটানোর কথা, সেখানে রিকশার প্যাডেল চালিয়ে অবিরাম ছুটে চলছেন রাস্তা-ঘাটে। ব্যাটারিবিহীন এ রিকশায় যাত্রী নিয়ে চলতে কষ্ট হলেও তবুও জীবিকার তাগিদে ছুটছেন এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তরে। সাদুল্লাপুর উপজেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসম সাজ্জাদ হোসেন পল্টন বলেন, তাকে সরকারি-বেসরকারিভাবে সহযোহিতা করা দরকার। সাদুল্লাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র রায় বলেন, দাপ্তরিক কোনো সুযোগ আসলে মুনছুর আলীর ব্যাপারে বিবেচনা করা হবে।