শীতে ব্যস্ত লেপের কারিগর পাড়া

প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্বাস আলী, নওগাঁ

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁয় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। শীত নিবারনে লেপ-তোষক তৈরিতে ধুম পড়েছে কারিগর পাড়ায়। তবে গত বছরের তুলনায় লেপ তৈরির উপকরণ কাপড় ও তুলার দাম কিছুটা বেড়েছে। এতে দোকানীর সাথে ক্রেতাদের বাড়তি কথা বলতে হচ্ছে। গত কয়েকদিন থেকে জেলায় মৃদু শৈতপ্রবাহ বইছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মিলছে না সূর্যের দেখা। দুপুরের দিকে সূর্য উঠলেও কোনো তীব্রতা থাকে না। সন্ধ্যার পর থেকে হালকা বাতাসের সঙ্গে কুয়াশা। রাত যত গভীর হয়, শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। প্রচণ্ড ঘন কুশায়া। গত কয়েক দিন সর্বনিম্ন ৯ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলিসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে জেলার বদলগাছী কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্র।

ব্যবসায়ীরা জানান, কাপাস তুলা ১৭০ টাকা কেজি, যা গত বছর ছিল ১৪০ টাকা। রুলের তুলা ১০ টাকা বেড়ে এবছর বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, কালার তুলা ৫ টাকা বেড়ে ৪০ টাকা, কালো তুলা ৭ টাকা বেড়ে ২৫ টাকা এবং ফাইবার তুলা ২০ টাকা ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি দামের ফারাক শিমুল তুলা। গত বছর ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এবছর তা ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ক্রেতাদের কাছে স্বল্প দামের তুলার চাহিদা রয়েছে। লেপ তৈরির জন্য লাল রঙের শালুকা কাপড় ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা গজ, মারকিন ৬০ টাকা গজ ও পাট্টা কাপড় ৪০-৪৮ টাকা গজ। প্রতি গজ কাপড়ে এ বছর বেড়েছে ১০-১৫ টাকা।

সদর উপজেলার খিদিরপুর গ্রামের রেজাউল ইসলাম বলেন, গত বছর তুলা কিনে তেল তৈরিতে খরচ পড়েছিল ১ হাজার ৫০০ টাকা। এবছর সেই পরিমাণ তুলা দিয়ে লেপ তৈরিতে খরচ পড়েছে ১ হাজার ৮৫০ টাকা। কাপড় ও তুলার দাম বেড়েছে। বাজার ঊর্ধŸমুখির কারণে সবকিছুতে খরচ বেড়েছে। তবে নিম্নবৃত্তদের জন্য সমস্যাটা বেশি হবে। কারিগর লিটন হোসেন বলেন, শীত বাড়লে আমাদের কাজের চাপও বাড়ে। এখন ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। তবে এ ব্যস্ততা সারা বছর থাকে না। শীতের কয়েক মাস কাজ বেশি হওয়ায় আয়ও বেশি হয়। দিনে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা হচ্ছে। বছরের অন্য মৌসুমে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা হয়। এ সময়টা অনেকে অন্য পেশায় চলে যাই।

নওগাঁ বেডিং কারিগর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক আব্দুর রশিদ বলেন, জেলায় প্রায় ২০০ জন কারিগর রয়েছে। শীত মৌসুমে প্রতিদিন জনপ্রতি প্রায় ৫০০ টাকা মজুরি হিসেবে লক্ষাধিক কাটা আয় হয়। শীতের তিনমাস (ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি) কারিগরদের এ কাজ থাকলেও বাঁকী সময় কাজের পরিমাণ কমে যাওয়ায় তাদের ভিন্ন পেশায় রোজগার করতে হয়।

নওগাঁ তুলাপট্টি ব্যবসায়িক মালিক সমিতির সভাপতি আবিদুর রেজা উজ্জল বলেন, শীত জেকে বসায় লেপ-তোষক তৈরির যেমন চাহিদা বেড়েছে তেমনি কাপড় ও তুলার দামও বেড়েছে। ক্রেতারা কাপড় ও তুলা কিনতে এসে দাম শুনে এক প্রকার চমকে উঠার মতো। তারপরও কয়েক দোকান ঘুরে তারা কিনছেন। দাম বাড়ায় ক্রেতাদের সাথে কথাও বেশি বলতে হচ্ছে। বাজার ঊর্ধ্বমুখির কারণে এ অবস্থা।