যে কারণে চুয়াডাঙ্গায় বেশি শীত
প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
শীত যেন কমছেই না সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গায়। গতকাল শুক্রবারও ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ছিল দেশের এবং এই শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ভৌগোলিক অবস্থানে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা চুয়াডাঙ্গা আর যশোরে এবার শীত মৌসুমে সবচেয়ে বেশি শীত পড়ছে। এছাড়া তেঁতুলিয়া ও দেশের উত্তর-পূর্বের এলাকা শ্রীমঙ্গলেও একই অবস্থা। তবে এবার শীত মৌসুমে বাংলাদেশের ‘শীতের হটস্পট’ মূলত চুয়াডাঙ্গা। এবারসহ প্রায় ২০ বছর ধরে চুয়াডাঙ্গায় এই তীব্র শীত পড়ছে। এছাড়া এই শীত মৌসুমে গত ডিসেম্বরে তাপমাত্রা ১০ এর নিচে নামে বেশ কয়েকদিন। আর একটানা তিনদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও গত ডিসেম্বরে রেকর্ড হয়। এছাড়া চলতি মাসে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা যশোরে রেকর্ড করা হয়। সেটাও ছিলো দেশের ও এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তবে গত বৃহস্পতিবার সব রেকর্ড ভেঙে চুয়াডাঙ্গায় ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা এই শীত মৌসুম ও দেশের সর্বনিম্নœ তাপমাত্রা আজ পর্যন্ত। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৭৫ বছর বয়সী রেণু বেগম এই শীতে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তিনি বলেন, ২০-২৫ বছর আগে এতো শীত তার লাগেনি। তবে মাঝের বছরগুলোতে বেশ শীত অনুভূত হলেও এবার যেন শীতের তীব্রতা বেশি। এতেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ৫০ বছর বয়সী চুয়াডাঙ্গা শহরের রিকশাচালক শুকুর মন্ডলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, গত ১০-১৫ বছর প্রতি বছরই শীত লাগে খুব। তবে এবারের শীত খুব তীব্র, কোনো কাজই করা যাচ্ছে না। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইবুর রহমান বলেন, ভূ-প্রাকৃতিক কিছু কারণেই এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া বিশ্বজুড়ে যে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে এর সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতির সম্পর্ক রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এখন গ্রীষ্মকালে বেশি গরম পড়বে, শীতকালে বেশি শীত। আর এসব ঘটনা ঘটছে প্রাকৃতিকভাবেই। এখানে কারও কোনো হাত নেই। এছাড়া গাছপালা কমে যাওয়া, জলাশয় অপেক্ষাকৃত কম হওয়ার কারণে এখানে শীতের আধিক্য বেশি। তিনি আরও বলেন, আগে পুরো শীত মৌসুমে তিন থেকে চারটি শৈত্যপ্রবাহ হতো। কিন্তু এখন তা বেড়ে দিগুণ। আবার যশোরে কম জলাশয় থাকার কারণে সেখানেও প্রায় চুয়াডাঙ্গার মতোই শীত পড়তে দেখা যায়।