লালমনিরহাটের পাটগ্রামে গত শুক্রবার সকালে ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে মা ও দুই শিশুসন্তানের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন- পাটগ্রাম ইউনিয়নের ধবলসুতি রহমানপুর গ্রামের গৃহবধূ সুমি আক্তার (২৭), তার মেয়ে তাসমিরা তাবাসুম তাসিন (৬) ও ছেলে তৌহিদ (২)। এ ঘটনায় লালমনিরহাট রেলওয়ে থানায় সুমির বাবা আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে মামলা দেন। পুলিশ সুমির স্বামী রাশেদুজ্জামানকে শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে। লালমনিরহাট রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস আলী এসব তথ্য জানিয়েছেন।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়দের মতে, দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে আসা বুড়িমারী কমিউটার ট্রেনটি শুক্রবার সকালে বুড়িমারী স্থলবন্দর রেলস্টেশনে যেতে থাকে। এ সময় বুড়িমারী ইউনিয়নের দর্জিটারী এলাকার রেললাইনে চলন্ত ট্রেনের নিচে সুমি আক্তার দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে ঝাপ দেন। এতে ঘটনাস্থলে রেলে কাটা পড়ে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়। এ সময় ছেলে তৌহিদ গুরুত্বর আহত হয়। পরে পাটগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তৌহিদকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় তৌহিদেরও মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকে রাশেদুজ্জামান পলাতক ছিলেন।
হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের সুমির বাবা আজিজুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে সুমির সাথে তার স্বামী ও শাশুড়ি প্রায়ই ঝগড়া এবং মারপিট করত। ঘটনার দিন সকালেও তাদের ঝগড়া হয়। এ সময় তারা সুমিকে মরতে বলে। এ কারণে সুমি দুই সন্তানকে নিয়ে ট্রেনে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। ঘটনার বিচার চেয়ে তাদেরকে আসামি করে লালমনিরহাট রেলওয়ে থানায় মামলা দিয়েছি।
লালমনিরহাট রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস আলী বলেন, গতকাল শনিবার লালমনিরহাট মর্গে তিন লাশের ময়নাতদন্ত করে পরিবারের নিকট লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রধান আসামি রাশেদুজ্জামানকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিকে ধরতে চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।