পাবনায় ছাগল পালন খামারের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রামগঞ্জে ব্লাক বেঙ্গল ছাগল পালন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক মানুষ। অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ায় গ্রামীণ দরিদ্রজনগোষ্ঠীর দারিদ্র্যবিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে ছাগল পালন।
ছাগলের খামার করে নিজেদের ভাগ্য বদলে যাওয়া কয়েকজন খামারির সাথে কথা বলে জানা গেছে এমন তথ্য।
সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের গাছপাড়া এলাকার ব্লাক বেঙ্গল ছাগলের খামারি ফরিদা খাতুন জানান, তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে ছাগল লালন পালন করছেন। বর্তমানে তার খামারে ১০টি ব্লাক বেঙ্গল ছাগল রয়েছে। একটি ছাগল বছরে দুইবার এক থেকে একাধিক বাচ্চা দেয়। প্রতি ছাগলের বাচ্চা ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন তিনি। খামারি খুশিনা বেগম জানান, লাভজনক হওয়ায় তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে পাঠা লালন পালন করছেন। তার খামারে দুইটি পাঠা থাকলেও ব্লাক বেঙ্গল জাতের ছাগল উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় তাকে বিনামূল্যে পিওর ব্লাক বেঙ্গল পাঠা দেয়ায় তার খামারে এখন পাঠা রয়েছে চারটি। সদরের দাপুনিয়া ইউনিয়নের সাহাদিয়ার গ্রামের ছাগলের খামারি অঞ্জনা খাতুন জানান, তার স্বামী পেশায় একজন অটোরিকশা চালক। স্বামীর আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম হতো। তিনি প্রায় ৫ বছর ধরে ব্লাক বেঙ্গল ছাগল লালনপালন করে সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন। জেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের একটি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের ব্লাক বেঙ্গল ছাগল বিশ্বমানের সেরা একটি ছাগল। ব্লাক বেঙ্গল ছাগলের মাংস যেমন সুস্বাদু তেমনি চামড়া আন্তর্জাতিক বাজারে উন্নতমানের বলে স্বীকৃত। জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আল মামুন হোসেন মন্ডল জানান, জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে দুইজন করে মোট ১৪৮ জনকে ব্লাক বেঙ্গল জাতের ছাগল উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় বিনামূলো ছাগলের জন্য প্লাস্টিকের আধুনিক মাচাঘর নির্মাণ, বিনামূল্যে ভিটামিন, মিনারেল, কৃমি ওষুধ, ছাগলের বাচ্চার দুধ দেয়া হয়েছে। ১৮ জনকে বিনামূল্যে দুটি করে মোট ৩৬টি পিওর ব্ল্যাক বেঙ্গল পাঠা দেয়া হয়েছে। এছাড়া আধুনিক পদ্ধতিতে ছাগল পালনের জন্য তাদের একাধিকবার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তিনি বেকার নারী-পুরুষের হতাশ না হয়ে ব্লাক বেঙ্গল জাতের ছাগল পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সরকার সার্বিক সহযোগিতা করবে।