নওগাঁয় ইরি-বোরো রোপণে ব্যস্ত চাষি

প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্বাস আলী, নওগাঁ

উত্তরের জেলা নওগাঁয় ইরি-বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। গত বছরের লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে এবার নতুন উদ্যোমে চলছে চাষাবাদ। তবে শীতের ঠান্ডা ও কুয়াশায় কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে শ্রমিক ও চাষিদের। এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকলে ফসল ঘরে তুলতে পারবেন তারা। যেহেতু ফসল উৎপাদন খরচ বেড়েছে। বাজারে ধানের দাম ভালো থাকলে কৃষকও লাভবান হবেন, এমন আশাবাদী তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর বোরো আবাদে জেলার ৪০ হাজার কৃষককে ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ৫ কেজি এমওপি সার প্রণোদনা হিসেবে কৃষি অফিস থেকে প্রদান করা হয়েছে। জেলায় ১০ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমি রোপণ করা হয়েছে। সদর উপজেলার চকচাপাই গ্রামের কৃষক খবির উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, সার, কীটনাশক, জ্বালানি তেল ও শ্রমিকের দাম বেড়ে যাওয়ায় ফসল উৎপাদন খরচ বেড়েছে। জমিতে বিঘাপ্রতি হালচাষ ১ হাজার টাকা, ডিএপি সার ৪৪০ টাকা (২০ কেজি), পটাশ সার ৪৪০ টাকা (২০ কেজি), ইউরিয়া ৬৩০ টাকা (৩০ কেজি), কীটনাশক ২ হাজার টাকা, চারা রোপণ ১ হাজার ৫০০ টাকা, ঘাস নিড়ানি ১ হাজার ৫০০ টাকা, পানি সেচ ২ মন ধান বাজারমূল্য ২ হাজার ৪০০ টাকা এবং ধান কাটামাড়াই ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। মোট ১৪ হাজার ৯১০ টাকা। বোরো আবাদ লাগানো থেকে শুরু করে ঘরে উঠা পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। আর বিঘাপ্রতি ফলন হয় প্রায় ২৪ থেকে ২৮ মন। যদিও গত বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এ বছর আশা করছি কোনো সমস্যা হবে না। বাজারে ধানের দামও ভালো পাওয়া যাবে।

শৈলগাছী গ্রামের কৃষক মজনু সরদার বলেন, জমি রোপণ ১৭ দিন হয়েছে। প্রচুর কুয়াশা ও শীতের কারণে চারা হলুদ হয়ে নষ্ট হচ্ছে। যেসব জমি রোপণ করা হয়েছে, চারা গোড়া নষ্ট এবং হলুদ হয়ে যাচ্ছে। যেসব চারা নষ্ট হয়েছে সেখানে নতুন পরিগুজ দিতে হবে। এতে বাড়তি খরচ হবে।

জেলার সাপাহার উপজেলা থেকে কাজ করতে আসা আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এলাকায় কাজ না থাকায় ১৫ জন বোরো ধান রোপণের কাজ করতে সদর উপজেলায় আসা হয়েছে। বিঘাপ্রতি ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা চুক্তিতে ধান রোপণের কাজ করা হচ্ছে। শীতের কারণে জমির কাদা-পানিতে কাজ করতে অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। ঠান্ডার কারণে দিনে ৩ থেকে ৪ বিঘা জমি রোপণ করা হচ্ছে। আমাদের আয়-রোজগার কমে গেছে।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু হোসেন বলেন, এ বছর জেলায় ১ লাখ ৮৯ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা থেকে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েয়েছ ৮ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন। শৈত্যপ্রবাহে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশাবাদী।