ফেনীতে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু হয়েছে নানা জাতের কুল। গড়ে উঠেছে উচ্চ ফলনশীল জাতের কুল বাগান। ভরা মৌসুমে পাকাণ্ডকাঁচা কুলে থোকায় থোকায় ভরে গেছে বাগানগুলো। বলসুন্দরি, কাশ্মীরি, ভারত সুন্দরি ও টক-মিষ্টি কুলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় জেলায় ছোট-বড় বাগান গড়ে উঠেছে। অল্প সময়ে কুল চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় কৃষক ও শিক্ষিত বেকার যুবকরা ঝুঁকছেন কুল চাষে। চলতি মৌসুমে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে নতুন নতুন কুল বাগান বেড়েছে। কৃষক পর্যায়ে কথা বলে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ জেলায় প্রায় কোটি টাকার কুল উৎপাদন হবে।
ফেনী শহরতলীর আলী আজ্জম সড়কের পাশে আছমত আলীর বাগানে গিয়ে দেখা যায় সেখানে গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, আপেল কুল, বাউকুলসহ পাঁচ প্রজাতির কুল। তিনি জানান, গত বছরে ৪০ শতকের পর এবার আরও ১০ শতক জমিতে কুল চাষ বাড়িয়েছি। সে বছর ফলনের পাশাপাশি দামও ভালো ছিল। এবার চলতি বছরে সব মিলিয়ে লাখ খানেক টাকা খরচ হলেও মৌসুমের শুরতেই ৫০ হাজার টাকার মতো কুল বিক্রি হয়েছে। পুরো মৌসুমে এই বাগান থেকে দেড় থেকে সাড়ে ২ লাখ টাকার কুল বিক্রি করার আশা করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফেনী সদরের ফাজিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মজিবুল হক রিপন ৮০ শতক জমিতে, কালিদহ পাহারিয়া এগ্রোতে ৭০০ শতক, ধর্মপুরে ফরিদ উদ্দিন মাসুদ ৫০০ শতক ও আমিন বাজারে পাশে আরও কয়েকজন মিলে ২ একর জমিতে কুলের আবাদ করেছেন। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে আরও কয়েকটি কুল বাগান। এখানকার কুল খেতে সুস্বাদু, মিষ্টি, রসালো ও সাইজে অন্য কুলের চেয়েও বড়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ফেনীর উপ-পরিচালক মো. একরাম উদ্দিন বলেন, ফেনীতে কুলের বাণিজ্যিক আবাদ বাড়ছে।
সদরের পাহারিয়া এগ্রোসহ কয়েকটি কুল বাগান পরিদর্শন করে দেখা যায়, কুলের ফলন অন্য অঞ্চল থেকে ভালো। সবমিলিয়ে বলা যায়, এই অঞ্চলের মাটি কুলের চাষাবাদের জন্য উপযুক্ত।
পতিত জমিতে কুল চাষ করে ইতোমধ্যে অনেক চাষি আর্থিকভাবে সচ্ছল হচ্ছেন, অন্যদিকে পুষ্টির ঘাটতি পূরণসহ জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। পতিত জমিতে চাষ করে কৃষিতে নতুন বিপ্লব সম্ভব।