বর্জ্যের পলিথিন থেকে গ্রিন ওয়েল

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এম জহিরুল হক মিলন, ফেনী

পরিবেশের জন্য ভয়াবহ হুমকি হয়ে ওঠা প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে তেল উৎপাদন করতে ফেনীতে ফুয়েল রিকোভারি পলিথিন রিডিউজ পাইরোলাইসিস প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। শহরের সুলতানপুর এলাকায় স্থাপিত এ প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভূঁইয়া ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল।

জানা গেছে, প্রতিবছর দেশে যে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হচ্ছে সেটি থেকে উৎপাদিত জ্বালানি তেল গৃহস্থালি ছাড়াও ব্যবহার করা যাবে কারখানায়। বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ফুয়েল রিকোভারি প্রতিষ্ঠান করতে সহযোগিতা করে ফেনী পৌরসভা। গৃহস্থালির ব্যবহৃত প্লাস্টিক খালি বোতল, ব্রাশ, প্রসাধনীর খালি প্যাকেট, খাদ্যদ্রব্যের মোড়কের প্যাকেট, স্যালাইনের প্যাকেট, পানির খালি বোতল, কোমল পানীয় বোতল, বাসাবাড়িতে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অপচনশীল প্লাস্টিক দ্রব্য মেশিনে দিয়ে তেল উৎপাদন করা হবে। সূত্র আরো জানায়, জৈব সার উৎপাদন কেন্দ্রের পাশে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অর্থায়নে ১১ লাখ ১৫ হাজার ৯০৮ টাকা ব্যয়ে গত ৪ মাস আগে পলিথিন রিডিউজ পাইরোলাইসিস মেশিন স্থাপন করা হয়। আর এ মেশিনে পলিথিন রিডিউজ করা হলে এখান থেকে গ্রিন ওয়েল নামের একধরনের জ্বালানি তেল উৎপাদন হবে। যা জ্বালানি ও বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন কাজে ব্যবহৃত হয় বলে জানান ভূইয়া ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কনসালটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আলমগীর হোসাইন। তিনি জানান, আগামী ৩ বছরের জন্য এ প্রজেক্ট তিনি পরিচালনা করবেন। এ মেশিনে রিয়েক্টর, এয়ারব্যাগ, কুলিং সিস্টেম, ড্রাপটিং সিস্টেম, গিয়ার বক্স, গ্যাস ওয়াটার, ওয়েল ট্যাংক, প্রেসার গ্রেস, টেম্পারেচার মিটার, ইমারজেন্সি ভারসহ মোট ১১টি যন্ত্রের মাধ্যমে কোনো প্রকার ধোঁয়া ও বায়ুদূষণ ছাড়া পলিথিনকে রিডিউজ করে বাষ্পের সাহায্যে পাইরোলাইসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তেল উৎপাদন করা হবে। এ মেশিনটি চালাতে সর্বমোট ১০ জন অপারেটর প্রয়োজন। তবে পরীক্ষামূলক উৎপাদনে আমরা একজন অপারেটর একজন ম্যানেজার, দুইজন এসিস্ট্যান্ট দিয়ে প্রক্রিয়া শুরু করেছি। ফেনীর পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট তানভীর আহমেদ জানান, ফেনী পৌরসভার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থা অরবিট হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন। যদি ঠিকমতো হাসপাতাল ও গৃহস্থালি বর্জ্যের পলিথিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভূঁইয়া ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালকে সাপ্লাই দিতে পারে তাহলে সরকারের ভিশন বাস্তবায়ন হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শওকত আরা কলি বলেন, পলিথিন রিডিউজ করে পাইরোলাইসিস প্রক্রিয়ায় তেল উৎপাদন করলে একদিকে পরিবেশ রক্ষা হবে অন্যদিকে তেল উৎপাদনে আয় বাড়বে। এ প্ল্যান যেসব জেলায় স্থাপন করা হয়েছে সেখানে পরিবেশের আমূল পরিবর্তন হবে। এজন্য শুধু শহর নয় গ্রামের হাটবাজার, বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত পলিথিন, প্লাস্টিকের খালি বোতলসহ অপচনশীল দ্রব্য নির্দিষ্ট স্থানে জমিয়ে রেখে তা পৌরসভার মাধ্যমে প্লান্টে পাঠানো উত্তম। এতে যেমনি তেল উৎপাদন হবে কিছু মানুষের কর্মেরও ব্যবস্থা হবে। এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে।