দেশের সেচ প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম একটি ‘চাঁদপুর সেচ প্রকল্প’। চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার ৬ উপজেলার প্রকল্পভুক্ত আবাদযোগ্য জমিতে সেচ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাদির মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে এটি বাস্তবায়ন হয়। প্রকল্পভুক্ত ৫৩ হাজার হেক্টর এলাকা বন্যামুক্ত ও জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা করে ২৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যে ১৯৭৮ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। ৪৪ বছর পার হলেও প্রকল্পের ১২০০ কিউসেক ক্ষমতাসম্পন্ন চর-বাগাদী পাম্পিং প্লান্টের পাম্প মেশিনগুলো প্রতিস্থাপন হয়নি। বার্ষিক সংস্কার হলেও কর্মক্ষমতা অনেক কমে এসেছে। সেচ মৌসুমে চাহিদার আলোকে পাম্পগুলো পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সেচ কাজের পাম্পগুলো পরিবর্তন খুবই জরুরি মনে করছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন চর-বাগাদী পাম্পিং প্লান্টে গিয়ে দেখা যায়, ৬টি পাম্পের মধ্যে একটি পাম্প বন্ধ রয়েছে। বাকি ৫টি চলমান।
এই পাম্পিং প্লান্টের ইনচার্জ উপ-সহকারী প্রকৌশলী শরীফ মাহমুদ বলেন, সেচ মৌসুম অর্থাৎ জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৬টি পাম্পই এই চার মাস চালু রাখতে হয়। কিন্তু মেশিনগুলোর কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ায় গড়ে ১৫ ঘন্টা পরিচালনা করা সম্ভব। একই সঙ্গে আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। মাত্র দুইজন অপারেটর দিয়ে চলছে বড় ধরনের এই প্লান্ট।
পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর-এর নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. রুহুল আমিন বলেন, মূলত প্লান্টে যে পাম্প মেশিনগুলো শুরুতে বসানো হয়েছে সেগুলো ছিল জাপানি ইবারা করপোরেশনের। এসব পাম্প সাধারণত ২০-২৫ বছর কর্মক্ষম থাকে। কিন্তু এগুলোর বয়স এখন ৪৪ বছর। যে কারণে এসব মেশিন পরিবর্তন করে নতুন করে পাম্প মেশিন স্থাপন করার জন্য ১১৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়। মন্ত্রণালয় এটি অনুমোদন করেন। কিন্তু টেন্ডার হয়নি। কারণ বর্তমান মেশিনগুলোই পরিচালনা করা সম্ভব এমন প্রশ্ন দেখা দিলে আবারও যাচাই বাছাই করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। এই কাজটির দায়িত্ব দেয়া হয় বুয়েট এবং ভারতীয় তোসিমা পাম্প কোম্পানিকে। ৩০ জানুয়ারির মধ্যে তারা রিপোর্ট দেয়ার কথা।