দিনাজপুরে আইন লঙ্ঘন করে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে। জেলার হাজার হাজার একর জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে ভাটায় ইট তৈরি করা হচ্ছে। এভাবে উপরিভাগের মাটি কেটে নেয়ায় একদিকে জমির উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে, অন্যদিকে ফসলের উৎপাদনও কমে যাচ্ছে। এদিকে উচ্চ আদালত অবৈধ ইটভাটা বন্ধে নির্দেশ দেয়ার পরও প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। উপরন্তু কিছু এলাকায় ফসলি জমিতেও ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এতে ইটভাটার ধোঁয়ায় ফসল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশও দূষিত হচ্ছে। এসব বিষয়ে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী বলেন, ইট তৈরির জন্য জমির উপরিভাগের মাটি কাটা বন্ধে বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করছে প্রশাসন। কৃষি বিভাগ ও প্রশাসনের সমন্বয়ে বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যারা এ ধরনের কাজ করছেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। জেলার ১৩টি উপজেলায় ২১৬টি ইটভাটায় ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি বিক্রি হচ্ছে। গত কয়েক দিন দিনাজপুরের; চিরিরবন্দর উপজেলার ওমরপুর, বড়গ্রাম, মোস্তফাপুর; খানসামা উপজেলার কুমুড়িয়া এলাকা ঘুরে জমির উপরিভাগের এক থেকে আড়াই ফুট গভীরতায় এসব মাটি কাটার চিত্র দেখা গেছে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ এর ৫(১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি কৃষিজমি, পাহাড় বা টিলা থেকে মাটি কেটে নিয়ে ইট তৈরির কাজে ব্যবহার করতে পারবে না। কিন্তু এই আইন লঙ্ঘন করে দিনাজপুরের ইটভাটা মালিকরা অবাধে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। ইটভাটার কয়েকজন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একটি ভাটায় প্রতি মৌসুমে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ লাখ ইট পোড়ানো হয়। প্রতি ১ লাখ ইট প্রস্তুতে প্রায় ৮ হাজার ঘনফুট মাটি প্রয়োজন হয়। দিনাজপুরে ইটভাটা আছে ২১৬টি। ওই হিসাব অনুযায়ী, ২১৬টি ইটভাটায় ইট তৈরির জন্য ৪ কোটি ৩২ লাখ ঘনফুট মাটি প্রয়োজন, যার এক দ্বিতীয়াংশই ফসলি জমির উপরিভাগ থেকে আসে।