ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাড়ছে সংরক্ষণযোগ্য হালি পেঁয়াজের আবাদ

বাড়ছে সংরক্ষণযোগ্য হালি পেঁয়াজের আবাদ

গড় মৌসুমে পেঁয়াজের আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে শরীয়তপুরের জাজিরাসহ ছয় উপজেলায় বৃদ্ধি পেয়েছে হালি পেঁয়াজের আবাদ। মুড়িকাটা পেঁয়াজ উত্তোলনের পর ১ থেকে ২ সপ্তাহের বেশি সংরক্ষণ করতে না পারায় কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে তেমন একটা লাভবান হয় না। ফলে হালি পেঁয়াজ আবাদে বেশি ঝুঁকছে ৬ উপজেলার পেঁয়াজ চাষিরা। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে কৃষি বিভাগও গত কয়েক বছর থেকেই সংরক্ষণযোগ্য হালি পেঁয়াজ আবাদ বৃদ্ধিকল্পে কাজ করায় জেলার সব উপজেলায় বৃদ্ধি পেয়েছে হালি পেঁয়াজের আবাদ। শরীয়তপুরের ৬ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আবাদ হয় জাজিরা উপজেলায়। কৃষি বিভাগ আশা করছে হালি পেঁয়াজ আবাদ ব্যাপকভাবে সফল সম্প্রসারণ কমাতে পারে গড় মৌসুমে আমদানিনির্ভরতা ও বৃদ্ধি করতে পারে স্বনির্ভরতা।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, চলতি মৌসুমে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ কিছুটা বিলম্বিত হলেও অনুকূল আবহাওয়া থাকায় বিঘাপ্রতি ৭৫ থেকে ৮০ মণ ফলন পাওয়া যাচ্ছে। শরীয়তপুরের মাঠে মাঠে এখন চলছে মুড়িকাটা পেঁয়াজ তোলার কাজ। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অংশ নিচ্ছে পেঁয়াজ তোলার কাজে। এই পেঁয়াজগুলো সংরক্ষণ করতে না পেরে তাৎক্ষণিক তুলনামূলক কম দামে বিক্রির ফলে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাচ্ছে না কৃষক। তাই মুড়িকাটা পেঁয়াজের পরিবর্তে ফলন পেতে একটু বেশি সময় লাগলেও বছরব্যাপী সংরক্ষণযোগ্য হালি পেঁয়াজ আবাদে ঝুকছেন জাজিরাসহ শরীয়তপুরের পেঁয়াজ চাষিরা। মুড়িকাটা পেঁয়াজের ফলন পেতে ৯০ থেকে ৯৫ দিন লাগলেও হালি পেঁয়াজের ফলন পেতে সময় লাগে ১২০ থেকে ১২৫ দিন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩ হাজার ৭৫০ হেক্টরে হালিও মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৭১ হেক্টর। এর মধ্যে জাজিরায় হালি পেঁয়াজসহ আবাদ হয়েছে ২৪শ’ ৮ হেক্টর।

জাজিরা উপজেলার বিকেনগর ইউনিয়নের আলমগীর কাজী বলেন, আমরা অনেক বছর থেকেই মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ করে আসছি। তবে এই জাতের পেঁয়াজ রাখি করা সম্ভব হয় না। ফলে উত্তোলনের সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় বাজারসহ পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দিতে হয়। সংরক্ষণ যোগ্য নয়, এ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে তখন পাইকাররা অনেক সময়ই আমাদের উপযুক্ত মূল্য দেয় না। তাই এ বছর দুই বিঘা জমিতে হালি পেঁয়াজের আবাদ করেছি। যা গড় সিজনে বেশি দামে বিক্রি করতে পারব।

জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জামাল হোসেন বলেন, জাজিরায় আবাদকৃত পেঁয়াজের অধিকাংশই মুড়িকাটা পেঁয়াজ। আর মুড়িকাটা পেঁয়াজ সংরক্ষণযোগ্য না হওয়ায় উত্তোলনের এক সপ্তাহের মধ্যেই বাজারজাত করতে হয়। কৃষক দামও কিছুটা কম পেয়ে থাকেন। এরই মধ্যে জাজিরা উপজেলায় ১৪৭ জন কৃষককে হালি পেঁয়াজের বীজসহ দেয়া হয়েছে নানা উপকরণ। তবে এ জাতের পেঁয়াজ আবাদ করে কৃষক যেমন নিজস্ব পদ্ধতিতে বছরব্যাপী সংরক্ষণ করে সুবিধামতো সময় অধিক দামে বিক্রি করতে পারবে, তেমনি এর বীজও সংরক্ষণ করতে পারবে। গত বছরের তুলনায় এ মৌসুমে জাজিরায় প্রায় ১৫ শতাংশ হালি পেঁয়াজ আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত