কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা
প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আব্বাস আলী, নওগাঁ
ফুল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন ফুল চাষিরা। নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁপানিয়া ইউনিয়নের লখাইজানি, তারতা ও উল্লাসপুর গ্রামটি নার্সারি গ্রাম নামে পরিচিত। যেখানে প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে গোলাপ ও গাঁদা ফুলের চাষ করা হয়েছে। সারা বছর এসব ফুলের কমবেশি চাহিদা থাকলেও ফেব্রুয়ারি মাসের চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়। এসব এলাকায় মেরিন্ডা, লিংকন, টাটা, ডিলাইট, তাজমহল, ইরানি ও থাই জাতের গোলাপ ও গাঁদা ফুলের চাষ করা হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পার্শ¦বর্তী জয়পুরহাট, বগুড়া ও রাজশাহী জেলায় বিক্রি করা হচ্ছে। সব ধরনের গোলাপ ফুল পাইকারিতে ৫ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। আর গাঁদা বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৫০ পয়সা। তবে কয়েকদিন পর গোলাপ ফুল প্রকারভেদে ১০-২০ টাকা পিস এবং গাঁদা দেড় টাকা থেকে ২ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হবে। ফুল বাগানে ও নার্সারিতে প্রায় ২০০ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। যাদের মধ্যে অধিকাংশ নারী। সারা বছরই তারা কাজ করে জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি বাড়তি আয় করছেন।
লখাইজানি গ্রামের ফুল চাষি সোহেল রানা বলেন, দেড় বিঘা জমিতে গোলাপ গাছ রয়েছে। সারা বছরই ফুল বিক্রি হয়ে থাকে। তবে ফেব্রুয়ারি মাসে চাহিদা বেশি থাকে এবং বিক্রিও ভালো হয়। সব ধরনের গোলাপ ফুল পাইকারিতে ৫ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। কয়েকদিন পর গোলাপ ফুল ১০-২০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হবে। এবছর ফুলের চেহারা একটু ভালো আছে। আশা করছি দামও ভালো পাব। নাহিম নার্সারির স্বত্বাধিকারী সেলিম দণ্ডল বলেন, এ এলাকায় ১২ জন ফুল চাষি রয়েছে। যেখানে প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে ফুলের বাগান রয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে গোলাপ ও গাঁদা ফুল মিলিয়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকার ফুল বিক্রি হবে। এছাড়া আরো দুইটি বাগানে প্রায় ১০ লাখ টাকার গোলাপ ফুলের কাটিং কলম বিক্রি হবে।
বগুড়া জেলার মহাস্থানগড় থেকে লখাইজানি গ্রামে গোলাপ ফুলের কাটিং কলম কিনতে আসছিলেন আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত ছয় বছর থেকে ফুলের নার্সারি শুরু করেছি। ইরানি গোলাপের চারা না থাকায় কিনতে আসা। প্রতিটি গোলাপের কাটিং ৫ টাকা পিস। ২ হাজার কাটিং কেনা হয়েছে। এ কাটিং আগামী ২ মাসের মধ্যে বাজারজাত হবে এবং লাভবান হতে পারব।
শহরের গাঁজা গোলার মোড়ের ফুল পট্টির তরফদার ফুলঘরের স্বত্বাধিকারী রায়হান তরফদার বলেন, এখানে তিনটি ফুলের দোকান রয়েছে। এছাড়া শহরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছোট কয়েকটি ফুলের দোকান আছে। এ মাসে সবগুলো দোকান মিলিয়ে প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকার ফুল বিক্রির আশা। তবে বৈশ্বিক মহামারির কারণে গত দুই বছর ফুলের ব্যবসায় মন্দা গেলেও এবার ভালো হওয়ার আশা। এবছর সবকিছুর দামই বেশি। দাম বেশি দিয়ে কিনতে হওয়ায় বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক মো. আবু হোসেন বলেন, জেলায় প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন সময় মৌসুমি ফুলের চাষ হয়ে থাকে। জেলায় প্রতি বছরই ফুল চাষ বাড়ছে। বাড়ছে ফুলের চাহিদাও। ফুল চাষে লাভবান হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের।