ভালো দাম পেতে কৌশলী ফুল চাষিরা

প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  হুমায়ুন কবির, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)

ফেব্রুয়ারি মাসে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানের জন্য বর্তমানে ফুল অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। ফেব্রুয়ারির সেই অনুষ্ঠানগুলো হলো ১৩ ফেব্রুয়ারিতে ১ ফাল্গুনে বসন্তবরণ, আবার একই দিনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য বিদ্যার দেবী-খ্যাত সরস্বতী পূজা উদযাপন। তার একদিন পরেই ১৪ ফেব্রুয়ারিতে উদযাপিত হয় ভ্যালেনটাইনস ডে অর্থাৎ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। আবার একুশে ফেব্রুয়ারিতে পালিত হয় ভাষাশহীদ দিবস যা এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। প্রতিটি দিবস পালনের জন্য অন্যতম অনুষঙ্গীয় উপাদান হলো ফুল। ফুল ছাড়া এখন এসব অনুষ্ঠান উদযাপন করার কোনো অর্থই হয় না। তাই এ মাসকে সিজন ধরে একটু বাড়তি লাভের আশায় ফুল চাষীরা অবলম্বন করছেন কৌশল। বিশেষ করে গোলাপ ফুলের ক্ষেত্রে তার এই কৌশলটি অবলম্বন করে থাকেন। গোলাপ গাছে কুড়ি আসলেই সেই কুড়িতে পরিয়ে দেয়া হচ্ছে এক ধরনের ক্যাপ। এতে করে ওই গোলাপ ফুলটি ফুটতে সময় নিচ্ছে বেশ কিছু দিন। অর্থাৎ ফুলচাষিদের চাহিদামত সময়ে ক্যাপটি খুলে দিলে ফুলটি ফুটে যাচ্ছে এবং তখন তিনি বেশি দামে বাজারে তা বিক্রি করতে পারছেন। আগে একটি গোলাপ ৩ থেকে ৫ টাকা পিস বিক্রি হলেও ফেব্রুয়ারিতে তা বেড়ে আকার, কালার ভেদে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। মূলত বার্থডে এই মুনাফার জন্যই গোলাপের কুড়িতে ক্যাপ পরানো হচ্ছে। দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে কালীগঞ্জে ফুল চাষ।

বিশেষ করে কালীগঞ্জ উপজেলার ১২টি গ্রামে প্রায় আড়াইশ’ একর জমিতে এখন চাষ হচ্ছে, জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, রজনীগন্ধ্যা, বিভিন্ন রঙের গোলাপসহ নানা জাতের ফুল। এর মধ্যে শুধু জারবেরা ফুলের চাষ হচ্ছে প্রায় ১৪ একর জমিতে। এলাকার উৎপাদিত ফুল প্রতিদিন চলে যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বড় বড় শহরে। উপজেলার সব থেকে বড় ফুল চাষি ত্রিলোচনপুরের টিপু সুলতান জানান, বিভিন্ন রঙের গোলাপ, জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকাসহ সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে চাষ করছেন। তিনি এবছরে আরো সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে নতুন করে ফুল চাষ করবেন বলেও জানান। গোলাপ ফুলের ক্ষেত্রে একটু কৌশল অবলম্বন করলে এ মাসে বাড়তি দাম পাওয়া যায়। উপজেলা বানুড়িয়া গ্রামের ফুল চাষি ইকরামুল ইসলাম জানান, তার ১০ কাঠা জমিতে গোলাপ ফুলের চাষ করেন। এতে গত ১ বছরে দেড় টাকা খরচা হয়েছে। তিনি এ পর্যন্ত লাভের মুখ না দেখলেও এখন থেকে বছরের ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার ফুল বিক্রয় করতে পারবেন বলে আশা রাখেন। কারন গোলাপ লাগানোর ৪ বছর পর্যন্ত ফুল তোলা যায়। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মাহবুব আলম রনি জানান, বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ২৫ একর জমিতে ফুল চাষ হচ্ছে। কৃষকরা দিন দিন ফুল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এই উপজেলার ফুল চাষিরা কৌশল অবলম্বন করে অধিক লাভবান হয় ফুল চাষ বাড়াতে তারা আগ্রহ প্রকাশ করছেন।