বগুড়ায় গাড়লে অল্প দিনেই সফলতা

প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আজাহার আলী, বগুড়া

বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলায় অনেক উদ্যোক্তা গাড়ল পালন করে বেশ লাভের মুখ দেখছেন। চাকরির পেছনে হন্য হয়ে না ছুটে শিক্ষিত বেকার তরুণরা গাড়ল পালনে এগিয়ে এসে অল্প দিনেই সফলতা মুখ সহজেই দেখতে পাবে।

জেলার কয়েকটি উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, গাড়ল পালনে উদ্যোক্তারা বেশ আগ্রহী। সারিয়াকান্দি উপজেলার ধাপ এলাকায় নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা যমুনা গাড়ল খামারের প্রো. আশরাফ আলী বলেন, তিনি অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী। প্রায় ৩ বছর আগে ছেলেকে নিয়ে ৪০ শতক জায়গার ওপর গাড়লের খামার গড়ে তোলেন। তাদের খামারে প্রথমে মেহেরপুর, টাঙ্গাইল জেলা থেকে গাড়ল সংগ্রহ করা হয়। গাড়ল বিভিন্ন পরিবেশের সঙ্গে সহজে মানিয়ে নিতে পারে। এ জন্য পালন করা খুব সহজ। ভেড়ার জাত গাড়ল পশু হিসেবে কোরবানিও দেয়া যায়। গাড়ল সাধারণত কাঁচা ঘাস, গাছের পাতা, বিচুলী, ভূষি, খৈলসহ সব ধরনের খাবার খেয়ে থাকে।

আশরাফ আলীর ছেলে কৃষি কর্মকর্তা মো. নাজমুস সাদাত শাওন বলেন, প্রথমে ৬৫টি গাড়ল নিয়ে খামার করলেও এখন ১৫০টি গাড়ল এবং কয়েকটি গরু পালন করছেন তারা। গাড়লের সংখ্যা আরোও বেশি ছিল। সম্প্রতি কিছু গাড়ল বিক্রি করেছেন। গাড়ল সব পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারে। এর রোগব্যধি অনেক কম। এ জন্য গাড়ল পালন সহজ। প্রতি ৭ মাস পর পর গাড়ল বাচ্চা দেয়। প্রসবকালে ২টি পর্যন্ত বাচ্চা হয়। ৪ থেকে ৫ মাসের একটি গাড়লের বাচ্চার দাম ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা। মাদি গাড়ল বিক্রি হয় প্রতিটি ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকায়। গর্ভবতী গাড়ল বিক্রি হয় ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকায়। পাঠা গাড়ল বিক্রি হয় প্রতিটি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায়। গাড়লের মাংস ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এর মাংস সুস্বাধু হওয়ায় চাহিদা বেশি। পূর্ণ বয়স্ক গাড়লের ওজন ৫৫ থেকে ৬০ কেজি পর্যন্ত হয়। চাকরি না খুঁজে গাড়ল খামার করেই স্বাবলম্বী হতে পারেন অনেকেই। গাড়ল পালনে বাড়তি খাবারের প্রয়োজন নেই। আগামীতে এক থেকে দের হাজারের মতো গাড়লের সংখ্যা বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, দিন দিন গাড়ল পালনে বাড়ছে কর্মসংস্থান। তার খামারে ৪ থেকে ৫ জন মানুষ কাজে নিয়োজিত। তিনি এলাকার অনেক বেকার যুবককে গাড়ল পালনে সহযোগিতা করেছেন। বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, গাড়ল পালন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে। পুষ্টির উৎস হিসাবে গাড়লের গুরুত্ব গরু-ছাগলের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। গাড়লের মাংসে কোলেস্টেরল অনেক কম। সব বয়সি মানুষ এর মাংস খেতে পারে। এ কারণে গাড়লের খামারে প্রতি অনেকের আগ্রহ দেখাচ্ছেন ও দিন দিন এর প্রসার বাড়ছে। গাড়ল পালনে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে। কিভাবে গাড়লকে উন্নত প্রজননে টিকে রাখা যায় সেই গবেষণা চলমান বলেও মন্তব্য করেন এ কর্মকর্তা।