ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অধিক কুল চাষ করে কৃষক লাভবান

অধিক কুল চাষ করে কৃষক লাভবান

সাতক্ষীরায় বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। অল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে এর আবাদ। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ জেলার উৎপাদিত কুল যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। তবে এ বছর ভালো দাম পাচ্ছে কুল চাষিরা। ৫ হাজার পরিবারে ১৫ হাজারের বেশি নারী ও পুরুষ শ্রমিক কুলবাগানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে, কুল চাষে অধিক লাভবান হওয়ায় কৃষক ঝুঁকে পড়েছে কুল চাষে। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অফিস থেকে জানা গেছে, এ বছর ৭৯৫ হেক্টর জমিতে কুল চাষ করা হয়েছে। তবে কলারোয়া, তালা, সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি কুল চাষ হয়ে থাকে। গত বছর জেলায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে কুল চাষ করা হয়। অধিদপ্তর আরও জানায়, বিঘাপ্রতি মৌসুমে ৫০ থেকে ৫৫ কুইন্টাল কুল পাওয়া যায়। বর্তমানে নারিকেল কুল কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও আপেল কুল ৬০ টাকা বল সুন্দরি কুল ৬০ থেকে ৭০ তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা এলাকার কুল চাষি মো. মিজানুর রহমান জানান, কুলবাগানে ১০ থেকে ১২ জন কাজ করে। একেকজনের মাসিক বেতন ১২ হাজার ১৩ হাজার টাকা। এখানে কাজ করে যে টাকা পায়, তা দিয়ে সন্তাদের লেখা পড়া ও সংসার ভালোভাবে চালে যায় তাদের।

কুলবাগান মালিক মো. নুরুজ্জামান জানান, এ বছর ১০ বিঘা জমিতে তিন রকম কুল চাষ করেছি। এই পর্যন্ত ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা খরচ করেছি। আমার এখানে অনেকের কর্ম সংস্থানের জায়গা হয়েছে। সরকারিভাবে যদি আর্থিক সহযোগিতা পেতাম, তাহলে আরও বড় পরিসরে কুলচাষ করতে পারতাম। এলাকার আরও অনেকের কর্মসংস্থানের জায়গায় হতো। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন জানান, সাতক্ষীরার বেলে দোঁয়াশ মাটি ও নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু কুল চাষের উপযোগী। ধান, পাট, সবজি ও মাছ চাষ অপেক্ষাও কুল চাষে অধিক লাভবান হওয়ায় কৃষক এ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। ফলে সাতক্ষীরা কুল চাষের সম্ভাবনাময় জেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। তিনি আরও বলেন, জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ও মাছের ঘেরের আইল কৃষকরা কুলচাষ করে আসছে। এবার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৩০ হেক্টর বা ২০ শতাংশের বেশি। এখান কার যে জাতগুলো হলো বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, আপেল কুল, বাও কুল, কাশ্মীরি, টক মিষ্টি ইত্যাদি জাতগুলো চাষ করেছে। তিনি আরও বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে কুল চাষ করতে খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা, বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। আবহাওয়া ভালো থাকলে কুল চাষে বেশি লাভ হবে। এদিকে, কুল একটি সুস্বাদু, মিষ্টি ও পুষ্টিকর ফল। দেশের মানুষের বিকল্প খাদ্য হিসাবে ও পুষ্টির পূরণে অনেকটা সহায়ক হবে কুল। দেশের চাহিদা মিটিয়ে কুল বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত