সাফজয়ীর মানবেতর জীবন

প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সাগর আহম্মেদ, কালিয়াকৈর

সাফজয়ী সাফল্যের অধিনায়ক রজনীকান্ত বর্মণ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বাড়ি ও জমিসহ যা কিছু অর্জন ছিল, তা একের পর এক বিক্রি করে সংসার চলছে তার। দেশকে সেরা সোনালি সাফল্য এনে দিলেও তার এই পঙ্গু জীবনের খোঁজ কেউ রাখেনি। রজনী গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার পিঙ্গাবহ এলাকার মৃত রাধাকান্ত বর্মণের ছেলে। সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৩ সালে সাফজয়ী ও দক্ষিণ এশিয়ার সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ার পর বাংলার ফুটবল প্রেমীদের মুখে মুখে ছিল জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক রজনীকান্ত বর্মণের নাম। অজোপাড়া গায়ের রজনী টাকা-পয়সায় নয় শুধু এক বেলা খাওয়ার বিনিময়ে পাড়ায় পাড়ায়, গ্রামে গ্রামে ফুটবল টুর্নামেন্টে খেলতেন। ১৯৯৩ সালে পাইওনিয়র লিগে লালবাগকে আর বয়েজের হয়ে শুরু তার ক্যারিয়ার। পরের বছর সরাসরি প্রথম বিভাগের দল অগ্রণী ব্যাংকে, এরপর তিনি মোহামেডানে, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, আবাহনী ও শেখ রাসেল ক্লাবে খেলেন। ১৯৯৯ সালে কাঠমান্ডু সাফ গেমসে স্বর্ণপদক জয়ী রজনী। দেশ সেরা সেন্টারব্যাকের হাতে অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড পরিয়ে দেন সাফজয়ী দলের অস্ট্রিয়ান কোচ জর্জ কোটান। সাফ জয়ের পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা তাকে কেক খাওয়ান। ২০১৬ সালে শেখ রাসেল থেকে অবসর যাওয়ার পর জীবনে নেমে এসেছে অমানিশার আঁধার। চার বছর আগে বাবা রাধাকান্ত ও গত বছরে স্ত্রী মৌসুমী বর্মণকে হারান। এক বছর আগে ভারতে মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পঙ্গুত্বের পথে রজনি। তাদের দুই মেয়ে ঋত্তিকা বর্মণ ও মহিমা বর্মণ ভারতে নানাবাড়িতে থাকেন। তাদের লেখাপড়াসহ বৃদ্ধ মা, ছোট ভাই ও ২য় স্ত্রীর ভরণপোষণসহ সব মিলিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন রজনী। নিজের অর্জিত বাড়িসহ ১৭ বিঘা জমি বিক্রি করেন। অবসরের পর বাফুফে তার খোঁজ নেয়নি। তবে সরকারের সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি আবেদন করেছেন অসহায় সাবেক ফুটবলার রজনী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাতওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, তিনি যদি লিখিতভাবে আবেদন করেন, তাহলে সরকারিভাবে তাকে সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।