ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জলাবদ্ধতায় বোরো আবাদ ব্যাহত

জলাবদ্ধতায় বোরো আবাদ ব্যাহত

যশোরের কেশবপুরের শ্রী নদীর নাব্য না থাকায় কেশবপুরের পূর্বাংশের বিল কালিচরনপুর, বিল খুকশিয়া, বিল বুড়ুলিয়াসহ ২০টি বিলের প্রায় ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে এবারও বোরো আবাদ হবে না। অন্যান্য বিলে কিছু কিছু আবাদ হলেও কালিচরনপুর বিলে বিগত ৫ থেকে ৬ বছরের মতো এবারও এককাঠা জমিতেও বোরো আবাদ করতে পারবে না কৃষকরা।

সরেজমিন জানা যায়, কেশবপুরের পূর্বাংশের ২০টি বিলের পানি শ্রী নদী দিয়ে নিষ্কাশিত হয়। পলি জমে শ্রী নদীর ভরাট হয়ে যাওয়ায় আশির দশকে কেশবপুরের বিশাল এলাকার ২০টি বিল দীর্ঘ দেড়যুগ ধরে স্থায়ী জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। ২০০৫ সালে সরকার বিল খুকশিয়ায় টিআরএম (টাইটাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) চালু করে শ্রী নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনে এবং বিলগুলোতে ফসল ফলতে শুরু করে। ২ বছর পর বিল খুকশিয়া বেঁধে মনিরাপুরের কপালিয়া বিলে টিআরএম চালু করা কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘ ৬ থেকে ৭ বছর পার হলেও কপালিয়া বিলে টিআরএম চালু না হওয়ায় খুকশিয়া বিলসহ অন্যান্য বিলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা টিআরএম প্রকল্পের কাটিং পয়েন্ট বেঁধে দেয় ২০১৩ সালে। টিআরএম চালু না থাকায় শ্রী নদীর নাব্য হারাতে থাকে এবং বিলগুলো আবারও জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে। টিআরএমের কারণে অন্যান্য বিলের কিছু কিছু এলাকায় বছরে একবার বোরো আবাদ হলেও কালিচরনপুর বিলে গত ৫ থেকে ৬ বছর কোনো ফসল হয়নি।

খুকশিয়া বিলের কৃষক ময়নাপুর গ্রামের মহেন্দ্র মন্ডল জানান, গত ৯ বছর তিনি কোনো ফসল ফলাতে পারেননি। তার গ্রামের সকলেরই একই অবস্থা। কালিচরনপুর গ্রামের মহিতোষ, কৃঞ্চপদ মল্লিক, গোবিন্দ, তপন, সাধনসহ অনেকেই জানান, টিআরএম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা ৬ থেকে ৭ বছর ধরে কোনো ফসল করতে পারেন না। মাছের ঘেরে কাজ করে কোনো রকম তাদের সংসার চলে। এই গ্রামের অনেকেই জলাবদ্ধতার কারণে এলাকা ছেড়ে পরিবার নিয়ে চলে গেছে।

জলাবদ্ধ বিলগুলো হলো বিল খুকশিয়া, নারায়ণপুর বিল, কালিচরনপুর বিল, বড়ুলি বিল, হাড়িয়াঘোপ বিল, কায়েমখোলা বিল, সারুটিয়া বিল, কৃঞ্চনগর বিল, ডহুরি বিল, বাগডাঙ্গা বিল, মনোহরনগর বিল, হদের বিল, গড়ভাঙ্গা বিল, গড়ালিয়া বিল, নোনাডাঙ্গা বিল, বলধালি বিল, আলতাপোল বিল, টেপুর বিল, ভায়না বিল ও আগরহাটি বিল।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ বলেন, সরকারি হিসেবে এই ২০টি বিলে মোট জমির পরিমাণ রয়েছে ৪ হাজার ৭৫৩ হেক্টর জমি। এরমধ্যে বোরো আবাদ হবে ৩ হাজার ৮১৭ হেক্টর জমি। জলাবদ্ধতার জন্য বাকি ৯৩৬ হেক্টর জমিতে এবং বারোমাসি মাছের ঘেরের কারণে আরও ১৯০ হেক্টর জমিসহ মোট ১ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে এবার বোরো আবাদ হবে না। তবে বাস্তবে আরও বেশি পরিমাণ জমিতে আবাদ হবে না বলে কৃষকদের দাবি। তিনি আরও বলেন, নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে যাওয়ার বিলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। জলাবদ্ধতার কথা প্রতিটি মিটিং তোলা হয়, তবে কোনো ব্যবস্থা হয়নি। গত বছরে উপজেলা বোরো আবাদ হয়েছিল ১৪ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে। এবার সেটাই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত