সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট শিল্প-বাণিজ্য কিংবা অর্থনীতি সব দিক থেকেই অনগ্রসর একটি জেলা। এক পাশে সীমান্ত ও অপরদিকে তিস্তার করাল গ্রাসে সংকুচিত জেলাটির জীবন ও জীবিকা অনেকটাই কৃষিনির্ভর। শিক্ষা খাতে বর্তমানে জেলাটি অনেকটা এগিয়ে গেলেও এখনো রয়েছে নিরক্ষরতা। এবার সেই নিরক্ষরতা দূরীকরণে আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের তারুণ্য দীপ্ত শিক্ষার্থীরা নিয়েছে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। শুধু স্বাক্ষরতাই নয়, প্রাথমিক শিক্ষা তথা অক্ষরজ্ঞান প্রদান, ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষামুখী করাসহ নানা পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। ক্লাস-পরীক্ষার পাশাপাশি সমাজের বিনির্মাণে এখন থেকেই অংশ নিচ্ছে তারা। উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের স্বাক্ষরতা ও প্রাথমিক শিক্ষা দিতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে তারা। ভাঙ্গাচোড়া পথ পাড়ি দিয়ে, রোদ মাথায় নিয়ে দলবেঁধে ধুলোবালি মাখা এলাকায় গিয়ে কথা বলে খোশগল্পের মাধ্যমে স্বাক্ষর শেখানো হচ্ছে। তালিকা করে পরবর্তী আবারো যোগাযোগ করে শতভাগ স্বাক্ষরতা পূরণের পরিকল্পনা তাদের। অধ্যক্ষ সারোয়ার আলমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও আ স ম রাহাতুন্নবী সহযোগিতায় পড়াশুনার ফাকে ছুটির দিনে দল বেঁধে বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। গ্রুপভিত্তিক উপদলে বিভক্ত হয়ে ধুলোবালি মাড়িয়ে দ্বারে দ্বারে গিয়ে খুঁজে বের করছে নিরক্ষর মানুষদের। সেখানে খোশগল্প কিংবা নানা উপস্থাপনায় স্বাক্ষর ও প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে হাতে-কলমে স্বাক্ষর শেখাচ্ছে তারা। এছাড়াও মোবাইল নম্বরসহ নাম-ঠিকানা তালিকা করে পরবর্তীতে দশ/বারো দিন পর আবারো এসে শিখিয়ে দেয়ার কথা বলছেন তারা। এরইমধ্যে প্রায় দুইশতাধিক লোকের তালিকাও করা হয়েছে। এভাবে পর্যায়ক্রমে সব এলাকার তালিকা করে গ্রুপভিত্তিক নিকটতম শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব দিয়ে প্রাথমিক জ্ঞান ও স্বাক্ষরতা শেখাতে সফল হওয়ার পরিকল্পনা তাদের। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিশাত তাসনীম দিপা বলেন, নিরক্ষরতা মুক্ত করতে আমরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তালিকা করছি। তালিকা অনুযায়ী তাদের প্রাথমিক শিক্ষা ও স্বাক্ষর শেখানো হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।