ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন

রেস্তোরাঁয় ‘স্মোকিং জোন’ বিধান বাতিলের দাবি

প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

হোটেল ও রেস্তোরাঁয় স্মোকিং জোন রাখার বিধান বাতিল করে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত পাস করতে হবে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটির হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিকরা। গতকাল সোমবার রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের সভাকক্ষে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সহযোগিতায় ও অ্যাডভ্যান্সমেন্ট অব হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট (আহার) বাংলাদেশ আয়োজিত ‘শতভাগ ধূমপানমুক্ত হসপিটালিটি গঠনে হোটেল রেস্তোরাঁ মালিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন আহ্বান জানান বক্তারা। তারা আরো জানান, রেস্তোরাঁয় একটি স্থানে ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া হলেও, সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়া ধোঁয়ায় পরোক্ষ ধূমপানের কবলে পড়ছেন অধূমপায়ীরা। এমনকি পরোক্ষ ধূমপানের ফলে তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও গ্রিনভ্যালী রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী নেকবর আলী তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, সে¥াকিং জোন’ থাকা সত্ত্বেও মানুষ রেস্তোরাঁতে গিয়ে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। এতে করে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, স্বাস্থ্য ক্ষতিও হচ্ছে। তাই ‘সে¥াকিং জোন’ আইন করে বন্ধ করা উচিত। নোয়াখালী জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি নুর আলম সিদ্দিকী মাসুদ বলেন, ধূমপানমুক্ত রেস্তোরাঁ হলে ব্যবসার উন্নতি হবে। তাই আমাদের সবাইকে এই বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আমি সমর্থন দিচ্ছি, আপনাদেরও সমর্থন দিতে অনুরোধ করছি। ফেনী জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সেক্রেটারি নুরুল আবসার কবীর শাহজাদা বলেন, আমরা ফেনী জেলার রেস্তোরাঁকে অনেক আগেই ধূমপানমুক্ত করতে পেরেছি। এতে সব রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরাই লাভবান হয়েছে। আমার মনে হয় না কেউ স্মোকিং জোনকে সাপোর্ট করবেন। হাজীগঞ্জ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি হুমায়ন কবীর বলেন, আমরা চাই হোটেল-রেস্তোরাঁকে শতভাগ ধূমপানের মুক্ত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত পাস করা জরুরি।

কুমিল্লা জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সেক্রেটারি নাসিরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, আমরা অবশ্যই চাই না রেস্তোরাঁতে স্মোকিং জোন থাকুক। আইন করে এটা বন্ধের পক্ষে আমরা। রেস্তোরাঁতে স্মোকিং জোন না রাখার বিধানটা সাধুবাদযোগ্য। মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে স্মোকিং জোন বাতিলের পক্ষে মতামত প্রদান করেন চাঁদপুর জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সদস্য ও হাজীগঞ্জ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ, লক্ষ্মীপুর জেলা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সেক্রেটারি মো. শাহজাহান প্রমুখ। তারা আরো বলেন, পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া অধূমপায়ীদের নাগরিক অধিকার। পাবলিক প্লেস ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বহাল রেখে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে অধূমপায়ীদের রক্ষা করা কখনোই সম্ভব নয়। এমতাবস্থায় জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় হসপিটালিটি সেক্টরে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা উচিত। প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাঙামাটির ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রসাশক এসএম ফেরদৌস ইসলাম বলেন, তামাকের নেপথ্যে যে একটা চক্র কাজ করছে সেটা আমদের রুখতে হবে। আমরা সবাই এখানে সমবেত হয়েছি এটা বন্ধ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠন সম্ভবপর বলে আমি মনে করি। রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক রাঙামাটি সম্পাদক আনোয়ার আল হক বলেন, ধূমপায়ীরা তার আপনজনকেও পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতির মুখে ফেলছেন। জেলা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ডা. ফয়সাল বলেন, ধূমপান মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত ধূমপান ক্ষতি করে থাকে। সভার সভাপতি এবং বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি ও আহার বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এম রেজাউল করিম সরকার রবিন জানান, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে রেস্তোরাঁকে পাবলিক প্লেস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ এর বিধান রাখা হয়েছে। যা পাবলিক প্লেসকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত রাখার ক্ষেত্রে অন্তরায়। শারমিন আক্তার রিনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী জনাব মো. শরিফুল ইসলাম। প্রবন্ধে তিনি বলেন, বাংলাদেশে পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ।