রামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল পানিশূন্য

বোরো আবাদ ব্যাহতের আশঙ্কা

প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মো. মাসুদ রানা মনি, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর)

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবোর চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের আওতাধীন খালের রামগঞ্জ অংশে পানি না থাকায় চলতি মৌসুমের বোরো আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পানির জন্য অনেকে বোরো ধান বপন করে পড়েছেন চরম বিপাকে। পানি সংকটের কারণে মৌসুমের শুরুতেই অনেক কৃষক বোরো আবাদ করতেও সাহস পাচ্ছেন না বলে জানা যায়।

সরেজমিন উপজেলার চন্ডীপুর, ইছাপুর, রাঘবপুর, নুনিয়াপাড়া, নয়নপুর, নারায়ণপুর ও শ্রীরামপুরসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায় অধিকাংশ বীজতলায় বোরোর চারা পড়ে আছে। ১ মাসের মধ্যে উক্ত বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন করে চাষাবাদ শুরুর কথা থাকলেও পানির অভাবে দেড়/দুই মাস অতিক্রম করায় অধিকাংশ বীজতলায় চারাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

কৃষক মোহাম্মদ হোসেন মিয়া জানান, কৃষকরা পানির অভাবে জমিতে লাঙ্গল দিতে পারছে না, আবার অনেকে বিভিন্ন উপায়ে পুকুর ও দীঘির পানি দিয়ে ধান বপন করলেও আবাদি জমিগুলোতে দেয়া পানি শুকিয়ে সদ্য লাগানো বোরো গাছগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

নারায়ণপুরের কৃষক ট্রলি কামাল ও রাঘবপুরের শ্যামল বলেন, ৪৫০ শতাংশ জমিতে ধারদেনা করে বোরো ধানের চাষ করেছি, কিন্তু পানির অভাবে ধানগাছগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এখন কীভাবে দেনা পরিশোধ করব সে চিন্তায় আছি। নুনিয়াপাড়ার সিদ্দিক বলেন, ২ একর জমিতে চাষ দিয়ে রাখছি পানির অভাবে বপন করতে না পারায় বীজতলায়ই নষ্ট হচ্ছে বোরো চারাগুলো।

এ ব্যপারে ৪নং ইছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমির হোসেন খান বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে পরিদর্শন করে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট সংকট নিরসনে আবেদন করেছি। তিনি সমস্যাটি সমাধানের ব্যাপারে চেষ্টা করবেন বলেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রামগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রায়হানুল হায়দার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ বছর এ প্রকল্পের অধীনে সাড়ে নয় হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ও ১৫শ হেক্টর জমিতে রবিশস্য আবাদ হবে। জানুয়ারির প্রথম দিকে পানি আসার কথা থাকলেও চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের মোটর খারাপ থাকায় এবং কোন কোন স্থানে খালে বাঁধ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করায় পানি আসতে দেরি হচ্ছে। সঠিক সময়ে পানি না পেলে উৎপাদন ব্যাহত হবে। তাই চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আশা করি, পানির সমস্যা শিগগিরই সমাধান হবে।

রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবীবা মীরা বলেন, এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষকসহ এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে কৃষি কর্মকর্তাকে সরজমিন পাঠিয়েছি এবং উপজেলা উন্নয়ন সভায় বিষয়টি সমাধানে আলোচনা করেছি। পানি সংকট সমাধানের জন্য চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে রামগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে যোগাযোগ করার জন্য বলেছি। আশা করি, অচিরেই পানির ব্যবস্থা হয়ে যাবে।