প্রাথমিক বৃত্তির সংশোধিত ফলাফল

নকলায় ১১০ জন বৃত্তিবঞ্চিত!

প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি

২০২২ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার সংশোধিত ফলাফলে শেরপুর নকলা উপজেলার মোট ১৬০ জন বৃত্তিপ্রাপ্ত শিশু শিক্ষার্থীর মধ্যে ১১০ জন বৃত্তিবঞ্চিত হয়েছে! এতে বৃত্তিবঞ্চিতদের মনভেঙে যেনো তছনছ হয়ে গেছে! বন্ধু-বান্ধবের টিপ্পনি ও লোকলজ্জার কারণে অনেকে ঘরে বসেই কাটাচ্ছে সারাদিন। প্রথম প্রকাশিত ফলাফলে বৃত্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে যে বা যারা সংশোধিত ফলাফলে বৃত্তিবঞ্চিত হয়, তাদের কোনো কোনো শিক্ষার্থী বন্ধু-বান্ধবের টিপ্পনি ও লোকলজ্জার ভয়ে ঘর থেকে বেড় হতে চাচ্ছেনা বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে। প্রথম প্রকাশিত ও সংশোধিত আকারে প্রকাশিত বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফলের সূত্র মতে, প্রথম প্রকাশিত ফলাফলে নকলা উপজেলা থেকে ট্যালেন্টপুলে বা মেধাবৃত্তি পায় ৫১ জন (ছেলে ২৫ জন ও মেয়ে ২৬ জন) এবং সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্ত হয় ১০৯ জন (ছেলে ৫৩ জন ও মেয়ে ৫৬ জন)। সংশোধিত ফলাফলে বৃত্তি প্রাপ্তের সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকলেও বৃত্তিবঞ্চিত হয়েছে ১১০ জন। বৃত্তিবঞ্চিতদের মধ্যে মেধাবৃত্তি প্রাপ্ত ছিল ৩৫ জন ও সাধারন বৃত্তি প্রাপ্ত ছিল ৭৫ জন। এছাড়া সংশোধিত ফলাফলে মেধাবৃত্তিতে ছেলে ও মেয়ের সংখ্যা অপরিবতর্তিত থাকলেও মেধাবৃত্তি প্রাপ্ত ১০ জন সাধারণ বৃত্তি পায় ও ছয়জনের ফলাফল অপরিবর্তিত থাকে; আর বৃত্তিবঞ্চিত হয় ৩৫ জন। সাধারণ বৃত্তির সংশোধিত ফলাফলে মেয়ের সংখ্যা একজন বৃদ্ধিপায়, তাতে ছেলের সংখ্যা একজন কমে। ফলে ৫৭ জন মেয়ে ও ৫২ জন ছেলে সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্ত হয়। এছাড়া সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্ত ৯ জন মেধাবৃত্তি প্রাপ্ত পায় ও ২৫ জনের ফলাফল অপরিবর্তিত থাকে; আর বৃত্তিবঞ্চিত হয় ৭৫ জন। উল্লেখ্য, ২৮ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফল ঘোষণার ৪ ঘণ্টার মাথায় ‘যান্ত্রিক ও কারিগরি ত্রুটির কারণে’ তা স্থগিত করা হয়। পরের দিন গত বুধবার সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। দেশের মোট ৮২ হাজার ৩৮৩ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছে। এর মধ্যে মেধা বৃত্তি পেয়েছে ৩৩ হাজার ও সাধারণ কোটায় বৃত্তি পেয়েছে ৪৯ হাজার ৩৮৩ জন শিক্ষার্থী। ট্যালেন্টপুল বৃত্তিপ্রাপ্তরা মাসে ৩০০ টাকা ও সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিপ্রাপ্তরা মাসে ২২৫ টাকা করে বৃত্তি পাবে। এছাড়া সব বৃত্তিপ্রাপ্তদের প্রতি বছর ২২৫ টাকা করে এককালীন দেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। গত ডিসেম্বর মাসে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এতে প্রতিটি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ পায়। তাতে সারা দেশের ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৭৫৯ জন শিক্ষার্থী এই মেধা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান- এই চারটি বিষয়ের প্রতিটিতে ২৫ নম্বর করে মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে এই পরীক্ষা নেয়া হয়, পরীক্ষার সময় ছিল ২ ঘণ্টা। প্রায় এক যুগ আগে এভাবে আলাদা করে বৃত্তি পরীক্ষা নেয়া হতো। কিন্তু ২০০৯ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি) শুরু হওয়ার পর আলাদা বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। প্রাথমিক সমাপনীর ফলাফলের ভিত্তিতেই শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি দেয়া শুরু হয়। কিন্তু করোনার অতিমারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা হয়নি। ২০২২ সালে সিদ্ধান্ত হয় নতুন শিক্ষাক্রম চালুর। নতুন শিক্ষাক্রমে যেহেতু প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা নেয়া হবে না, তাই প্রাথমিকে মেধা বৃত্তির জন্য যোগ্য শিক্ষার্থী বাছাই করতে ২০২২ সালের শেষে আবারও আলাদাভাবে মেধাবৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হয়।