রাবার ড্যামের সুফলে হচ্ছে জেলেদের ভাগ্যের উন্নয়ন

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সিদ্দিক হোসেন, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর)

দিনাজপুরের চার নদীতে রাবার ড্যাম ও জলকপাট দুই দশক ধরে কৃষকের আশীর্বাদ হয়ে কাজ করছে। কম খরচে সেচ সুবিধা ছাড়াও নদীতে বেড়েছে মাছ। ফলে জেলের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি ড্যামকেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে পর্যটন শিল্প, যা জেলার অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সহজ সেচের আওতায় এসেছে জেলার ১১ হাজার ৬৬৫ হেক্টর কৃষিজমি। জানা গেছে, ২০০৩ সালে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর কাঁকড়া নদীতে প্রথম রাবার ড্যাম নির্মাণ হয়। এরপর একে একে সদরের আত্রাই, বোচাগঞ্জের টাংগন এবং বিরলের পুনর্ভবা নদীতে আরো তিনটি রাবার ড্যাম নির্মাণ হয়। এছাড়া চিরিরবন্দরের চিরি নদীতে রয়েছে মিনি রাবার ড্যাম। কয়েক দশক ধরে উত্তরের জেলা দিনাজপুরে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছিল। এতে ওই অঞ্চলের কৃষিতে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করে। চারটি রাবার ড্যাম, একটি মিনি রাবার ড্যাম এবং দুটি জলকপাট এখন অনেক কৃষকের জন্য স্বস্তির উৎস হিসেবে কাজ করছে। মোহনপুর রাবার ড্যামটি চিরিরবন্দর ও সদর উপজেলার আত্রাই নদীতে অবস্থিত একটি রাবার ড্যাম বা ব্যারাজ। সদর উপজেলার ৮ নম্বর শংকরপুর ইউনিয়নের মধ্যে আত্রাই নদীর ওপর ২০১৩ সালের ২২ অক্টোবর এ ড্যাম উদ্বোধন করা হয়। ১৭ কোটি ৫১ লাখ ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাবার ড্যামটি এক দশক ধরে অনেক কৃষককে বেশি ধান উৎপাদন করতে, তাদের সেচ খরচ কমাতে এবং অন্য সবজি চাষে সহায়তা করছে। প্রচুর পানি প্রবাহের ফলে এলাকার জেলেরাও অনেক উপকৃত হচ্ছেন। ১৩৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে বাঁধটির খরিপ মৌসুমে প্রায় ৪৪ কিলোমিটার এলাকায় নদীর পানি মজুত রাখার ক্ষমতা রয়েছে। বর্তমানে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির সেচ এই ড্যামে করা হয়। ফলে এলাকায় চাষাবাদ ১০ শতাংশ বেড়েছে। যার পরিমাণ ৬ দশমিক ৬ মেট্রিক টন। এ ড্যামে ৪ হাজার সমিতিভুক্ত সদস্যসহ ৬০ হাজার কৃষক বিভিন্নভাবে সুবিধা ভোগ করছেন। এছাড়া মাছ চাষসহ এ প্রকল্প ঘিরে তৈরি হয়েছে পর্যটন এলাকা। পুনর্ভবা নদী রাবার ড্যাম ২০১৬ সালে ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সর্বশেষ রাবার ড্যাম নির্মাণ হয় বিরল উপজেলার ১২ নম্বর ইউনিয়নের পুনর্ভবা নদীর ওপর। এতে কৃষক আর মৎস্যজীবীদের ভাগ্যের দরজা খুলেছে।