ঢাকা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ধীরে চলছে গড়ের খাল খনন কাজ

ধীরে চলছে গড়ের খাল খনন কাজ

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে গত ২৮ জানুয়ারি ঐতিহাসিক গড়ের খাল খনন কাজের উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে খরগোশ গতিতে চলছে। ঐতিহাসিক ঘটনাবলি সপ্তদশ শতকের প্রথম দশকে বানিয়াচংয়ে বারো ভূঁইয়া আনোয়ার খাঁ ও তার ভ্রাতা হুসেন খাঁর সঙ্গে মুগলবাহিনীর যুদ্ধের বর্ণনা বাহারিস্তান-ই-গায়েবিতে পাওয়া যায়। বানিয়াচং ছিল সিলেটের প্রতাপশালী জমিদার আনোয়ার খানের রাজধানী। তিনি বারো ভূঁইয়াদের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে মুগলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। পঞ্চাশ খ্রিস্টাব্দে বানিয়াচং গ্রামের গোড়াপত্তন হয়। চার ইউনিয়ন পরিষদ কাঠামোর বিভক্ত গ্রামটি। গ্রামের নামে বানিয়াচং উপজেলার নামকরণ হয়েছে।

বানিয়াচং গ্রামের চারপাশ ঘেরা প্রায় ২০ কিলোমিটার পরিখা। একেবেঁকে বয়ে যাওয়া পরিখা স্থানীয়রা চেনেন গড়ের খাল নামে। পরিখাটি বর্ষাকালে লেকের রূপ ধারণ করে। সু-পরিকল্পনা ও কার্যকরি উদ্যোগ নিলে ঢাকার হাতিরঝিলের আদলে বানিয়াচংয়ের পরিখাকে ঘিরে ‘লেক’ গড়ে তোলা সম্ভব। পরিখাকে পুনর্খনন করে দুইপাড় পাকাবাঁধাই, দৃষ্টিনন্দন পুল ও ঘাট নির্মাণসহ শোভাবর্ধন ভৌত কাজ প্রকল্প গ্রহণের দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। দৃষ্টিনন্দন সাগরদীঘি, প্রাচীন পুরাকীর্তির বাড়তি আকর্ষণের সঙ্গে পরিখা লেক যুক্ত হলে চকচক ঝলমলে গ্রামে রূপ নেবে বানিয়াচং।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্তাবধানে ৭ কোটি ১৬ লাখ ১৫ হাজার টাকার বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে গড়ের খাল পুনর্খনন প্রকল্পের মাধ্যমে খনন কাজ শুরু করা হয়েছে।

খাল খনন প্রকল্পের মাধ্যমে গড়ের খাল প্রথম পার্ট এ ১৫ কিলোমিটার ও গড়ের খাল দ্বিতীয় পার্টে ৪.২০০ কিমি. খনন করা হবে। একই প্রকল্পের মাধ্যমে আরো ৫টি শাখা খাল খননের মাধ্যমে মোট ৩১.৬০০ কিমি. খাল খনন করা হবে। গড়ের খাল পুনর্খননের ফলে এর প্রস্থ হবে ৭ মিটার থেকে ১.৮০ মিটার পর্যন্ত। গড়ের খালের তীরে ৪ হাজার বৃক্ষরোপণ করা হবে। উপ-সহকারী প্রকৌশলী জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলে নৌপথ তৈরি হওয়া ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণের পাশাপাশি অত্র খালে তৈরি হবে মাছ ও খালের তীরে পাখির অভয়ারাণ্য। সেই সঙ্গে বাড়বে সেচ সুবিধা এবং পানীয় জলের সংকট দূর হবে। প্রকল্পটির কাজ অত্যন্ত সতর্কতা ও নিবিড় তত্তাবধানের মাধ্যমে এগিয়ে চলছে। সবার সহযোগিতায় খনন কাজ শেষ করা গেলে এটি বানিয়াচংবাসীর অনেক উপকারে আসবে।

স্থানীয় এমপি ও বেসরকারি সদস্যদের বিল ও বেসরকারি সদস্যদের প্রস্তাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল মজিদ খানের মতে, বানিয়াচং খাল পুনর্খননের মাহেন্দ্রক্ষণটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। আমাদের পূর্বপুরুষরা কবে কখন খাল খনন করেছিলেন তা আমরা জানি না। আমি অনেক চেষ্টা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পেরে নিজেকে গৌরাবান্বিত মনে করছি। আমি শত শত কোটি টাকার অনেক উন্নয়ন করেছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত