কাজলী শিম চাষে সাফল্যের হাসি

প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শামছুজ্জামান বাবুল, নান্দাইল (ময়মনসিংহ)

সবজি হিসেবে খাদ্য তালিকায় ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষের শিম-শিমের বীজ খুব পছন্দের একটি খাদ্য। তথ্যমতে দেশে ৫০টিরও বেশি শিমের জাত রয়েছে। ময়মনসিংহ অঞ্চলে বেশ কয়েকটি জাতের শিমের চাষ হয়। এরই মধ্যে কাজলী জাতের শিম অন্যতম। বাজারে বিভিন্ন জাতের শিমের চাহিদা থাকলেও কাজলী জাতের শিমের রুচিশীল চাহিদা। লাউশাকের সঙ্গে কাজলী শিম রান্নায় স্বাদই অন্যরকম। কাজলী শিম দেখতে ঘারো মেরুন ও সবুজ রঙের ভেতরে বড় বীজ থাকে। বাজারে এই শিমের পাশাপাশি শিম থেকে বের করা কাঁচা বীজেরও বেশ চাহিদা। মৌসুমের শুরু থেকে শেষ সময় পর্যন্ত কাজলী শিমের চাহিদার কমতি নেই। বাজারে অন্যান্য শিমের তুলনায় এই শিমের মূল্য বেশি থাকায় চাষাবাদে বেশ লাভবান হন চাষিরা। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় শিম চাষে ঝুঁকছেন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার কৃষকরা। কাজলী শিম ছাড়াও এ উপজেলায় বিভিন্ন জাতের শিম চাষ করছেন কৃষকরা। শিম চাষে লাভবান হওয়ায় সাফল্যের হাসি ফুটছে কৃষকদের মুখে।

সরজমিন নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের সুতারাটিয়া গ্রামের কৃষক মো. আব্দুল আলী জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সবজি চাষ করছেন। সফলতার সঙ্গে প্রতি বছর সবজি চাষ করে এখন তিনি বেশ স্বাবলম্বী। প্রতি বছরের মতো এ মৌসুমে ৫০ শতক (৫ কাঠা) জমিতে কাজলী জাতের শিম চাষ করছেন তিনি। এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ টাকার বেশি শিম বিক্রি করেছেন। আরও ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন। এতে তার ৪০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। কৃষক আব্দুল আলী আরো জানান, গত বছর তিনি ৬০ শতক জমিতে কাজলী শিম চাষ করে খরচ বাদে প্রায় ২ লাখ টাকা আয় করেছেন। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা যায়, বর্তমানে অন্যান্য শিমের দাম কম থাকলেও প্রতি কেজি কাজলী শিমের দাম ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। দোকানিরা জানান, মৌসুমের শুরুতে এই শিম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। নান্দাইল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর নান্দাইলে ১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষ হয়েছে। ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মধ্যে আচারগাঁও, চরবেতাগৈর ও বীরবেতাগৈর ইউনিয়নে বেশি পরিমাণে শিমের চাষ হয়। এছাড়াও চন্ডীপাশা, সিংরইল, রাজগাতি, গাংগাইল, শেরপুর, খারুয়া ইউনিয়নে শিমের চাষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক জানান, এখানকার শিম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে চাহিদা পূরণ করছে। আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূল থাকায় শিমের ভালো ফলন এবং উচ্চ মূল্য বাজার দর পাওয়ায় শিম চাষে বেশ খুশি কৃষকরা। খরচের চেয়ে আর্থিকভাবে অধিক লাভবান হওয়ায় শিম চাষের উপর আগ্রহ বাড়ছে এ অঞ্চলের কৃষকদের। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান জানান, এই অঞ্চলের জমি সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী।