গাইড বইয়ের রমরমা বাণিজ্য

প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলমগীর সিদ্দিকী, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)

সাতক্ষীরায় বই উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতে লাইব্রেরি ও স্কুলগুলোতে শুরু হয়েছে নিষিদ্ধ নোট গাইড বইয়ের রমরমা বাণিজ্য। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান, পুস্তক বিক্রেতা ও শিক্ষকদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা নিষিদ্ধ গাইড বাণিজ্যের এই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। অভিভাবকদের অভিযোগ, কিছু অসাধু শিক্ষক, প্রকাশনী, বিক্রেতা এসব অবৈধ গাইড বই বাজারজাতের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ফায়দা হাসিল করছেন যদিও দেশে ১৯৮০ সালের নোট বই নিষিদ্ধকরণ আইন বিদ্যমান। আর এই আইন অনুসারে গাইড ও নোটবই ছাপা এবং বাজারজাত করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এছাড়া ২০০৮ সালে নির্বাহী আদেশে ও শিক্ষা আইন ২০২০ সালের খসড়া আইনে চূড়ান্তভাবে নোটবই ও গাইড নিষিদ্ধ করা হয়। সূত্র জানায়, জেলাব্যাপী বইয়ের দোকানগুলোতে প্রকাশ্যে চলছে নিষিদ্ধ নোট গাইড বইয়ের রমরমা ব্যবসা। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে আবার একের ভেতরে সব বলে প্যাকেজ করে গাইড বিক্রি করছে বিক্রেতারা। এসব গাইড বই টেস্ট পেপার, সহায়ক বই, মেইড ইজিসহ বিভিন্ন নামে বাজারে বিক্রি করছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বইয়ের দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, দ্বিতীয় থেকে শুরু করে নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন নামে বিভিন্ন কোম্পানির গাইড বই বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সাজেশন নামেও গাইড বই বাজারে বিক্রি হতে দেখা যায়। পাঞ্জেরি প্রকাশনীর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আবু হাসান জানান, নোট গাইড বিক্রি হচ্ছে এটা সঠিক, আমরা স্কুলে স্কুলে যাচ্ছি সৌজন্য সাক্ষাৎ দিচ্ছি। শিক্ষকদের সাথে অর্থ লেনদেনের কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে আমাদেরই চলতে কষ্ট হচ্ছে। কাগজের দাম বৃদ্ধিসহ নানাবিধ কারনে আমরা সংকটে আছি। উপজেলা প্রাইমারি শিক্ষা অফিসার রফিজ মিয়া জানান, বর্তমান সময়ের শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে নোট গাইডের কোনো সম্পর্ক নেই। নোট গাইড শিক্ষার্থীদের কোনো কাজেই লাগবে না। অভিযোগ, শিক্ষকেরা কমিশন নিয়ে গাইড কিনতে ছাত্রদের চাপ প্রয়োগ করেন। গাইড বই নিষিদ্ধের আইনের প্রয়োগ নেই। আইনের প্রয়োগ থাকলে নিষিদ্ধ বই এভাবে বিক্রি হতে পারত না। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সাতক্ষীরার সচেতন মহল।