হরিহর নদ আবর্জনায় সয়লাব

প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর)

যশোরের কেশবপুরের হরিহর নদ আবর্জনায় সয়লাব হয়ে পড়েছে। নদে আবর্জনা ফেলার কারণে আশপাশের বাসিন্দারা দুর্গন্ধে টিকতে পারছে না। নদ এলাকা দূষণের শিকার তো হচ্ছেই, সেই সঙ্গে নদ ভরাট হয়ে বন্যার আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে। দেখার কেউ নেই। নদদূষণ বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।

কেশবপুর শহরের পাশ দিয়ে হরিহর নদ বয়ে চলেছে। এই নদ ঘিরেই কেশবপুর শহরের বিকাশ বলে ধারণা করা হয়। এই নদের পাশে গড়ে উঠেছে অনেক ব্যবসপ্রতিষ্ঠান। একসময় কেশবপুর ছিল খেজুরের গুড় ও ভুসির জন্য প্রসিদ্ধ। নদের নাব্য হারিয়ে ২০১৭ সালে কেশবপুর শহর নদের পানি উপচে বন্যা হয়। ২০১৯ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নদ খনন করে। এরপরে কেশবপুরে আর বন্যা হয়নি। এই নদই কেশবপুরের প্রাণ। নদদূষণ বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।

নদটি এখন দূষণের কবলে পড়েছে। শহরের নতুন ব্রিজ থেকে ধানহাটা পর্যন্ত নদটিতে প্রতিনিয়ত ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। বিশেষ করে নতুন ব্রিজের উত্তর পাশে মুরগির দোকান থেকে মুরগির পাখনা, নাড়িভুঁড়ি ফেলা হচ্ছে। পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। আর মাছের বাজারের নোংরা আবর্জনা, মাছ হিমায়িত রাখার কর্কশিটের বাক্স নদে ফেলে দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে পুরো নদে কচুরিপানা জমে পানিপ্রবাহ থমকে গেছে। এতে এলাকায় চরম পরিবেশ দূষণের সৃষ্টি হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নতুন ব্রিজের নিচে মুরগির পাখনা, নাড়িভুঁড়ি জমে স্তূপ হয়ে রয়েছে। সেখান থেকে উৎকট দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এ ছাড়া আশপাশের বাসাবাড়ির আবর্জনাও নদে ফেলে দেয়া হচ্ছে। কেশবপুর নতুন ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা চিকিৎসক কামরুল হাসান জানান, গমপট্টির খন্দকার জাকির হোসেনের দোকান থেকে প্রতি রাতেই এখানে মুরগির বর্জ্য ফেলা হয়। তা পচে চরম দুর্গন্ধ বের হয়। দুর্গন্ধে বাড়িতে টেকাই যায় না। স্থানীয় রাবেয়া ফার্মেসির মালিক রবিউল ইসলাম বলেন, রাত ১১টার পরে ব্রিজের ওপরে করিমন ও ভ্যানে করে ড্রাম থেকে নদে মুরগির নাড়িভুঁড়ি পাখনা ফেলা হয়। নিষেধ করা হলেও তারা শোনে না। অভিযোগের বিষয়ে পোলট্রি দোকানি খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, তার লোকদের মুরগির বর্জ্য নদে ফেলে ডুবিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়। এভাবে যাতে আর না ফেলে, সে বিষয়ে তার লোকজনকে নির্দেশ দেবেন বলে জানান।

কেশবপুর পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মুন্সী আসাদুল্লাহ বলেন, নদদূষণ ও কচুরিপানা পরিষ্কারে মেয়রকে বলেছেন। এভাবে নদদূষণ ও ভরাট হতে থাকলে পুনরায় বন্যা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই।

খোঁজ নিয়ে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, এ বিষয়ে অবশ্যই দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।