গমের ভালো দামে কৃষকের মুখে হাসি

প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলমাস আলী, ঈশ্বরদী (পাবনা)

পাবনার ঈশ্বরদীতে আগাম বোনা গম কাটতে শুরু করেছে কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন উপজেলার কৃষকরা। উপজেলার ৭ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভার মাঠে দেখা যায় গমের আবাদ। কৃষকরা বলছে তুলনামূলক অন্য ফসল আবাদের চেয়ে গম আবাদে খরচ কম, সেচ, কীটনাশক সার, লেবার থেকে শুরু করে পোকামাকড়ের আক্রমই কম হওয়ায় খরচ কম হয় সেজন্য লাভজনক। এছাড়াও এবার গম চাষের অনুকূল আবহাওয়া থাকায় তেমন পোকামাকড় আক্রমণ করতে পারেনি, তাই বাড়তি কীটনাশক দেয়ার প্রয়োজন হয়নি। যারা গম কেটে ঘরে তুলতে শুরু করেছেন তারা বলছেন বিগত বছরের তুলনায় এ বছরে গমের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। এবার ১ বিঘা জমির গম মাড়াই করে ১৫ থেকে ১৬ মণ গম পাচ্ছেন। বাজারে প্রতি মণ গম ১৬০০ থেকে সাড়ে ১৭০০ টাকা করে দাম পাচ্ছেন।

স্থানীয় কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছেন, মৌসুমের শুরুতে সরকারিভাবে বিনামূল্যে কৃষকদের গম চাষে আরো বেশি আগ্রহী করতে কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে এক হাজার কার্ডধারী কৃষকদের উন্নত জাতের বারি গম বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। এছাড়া উপযুক্ত পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে কীভাবে আরো গমের ফলন বাড়ানো যায় সে বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেয় স্থানীয় কৃষি অফিস। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাঠের যে দিকেই চোখ যায় সোনালি আধা পাকা শীষ বাতাসে দোল খাচ্ছে। কোনো কোনো জমিতে গম এখনো কাঁচা আছে তবে আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে গম পেকে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন চাষিরা। উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের আরামবাড়িয়া ব্লকের গোপালপুর গ্রামের কৃষক অধ্যাপক আলমাস আলী জানান, এবার তিন বিঘা জমিতে গমের আবাদ করেছেন। এবছর সার ও বীজের দাম বেশি হওয়ায় বিঘাপ্রতি পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি ভালো ফলনের আশায় বারি-৩৩ জাতের গমের আবাদ করেছেন। অধ্যাপক আলমাস আলী আরো বলেন, তিনি বিঘাপ্রতি জমিতে ১৫ মণ হারে ফলন পাওয়ার আশা করছেন। এদিকে গমের বাজারমূল্য ভালো হওয়ায় অন্য কৃষকরা গম চাষে আগ্রহী হচ্ছে। ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার জানান, এবছর ১৯৫০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ২০৫০ হেক্টর জমিতে। উপজেলায় মোট ৭১৯৬ মেট্রিক টন গম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া কৃষি অফিস কৃষকদের বারি-৩৩, বারি-৩২, বারি-৩১ ও বারি-৩০ জাতের গম আবাদের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। উপজেলার কমবেশি সব এলাকায় গমের আবাদ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা হিসেবে কৃষকদের বিনামূল্যে সার উন্নতজাতের বারি গম বীজ বিতরণ করা হয়। এছাড়া সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও তদারকি করছে উপজেলা কৃষি অফিস। তিনি আশা প্রকাশ করেন অন্য বছরের চেয়ে এ বছর গমের বাম্পার ফলন হবে ও ভালো দাম থাকায় কৃষকরা লাভবান হবেন।