নবী রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বিরিয়ানি হাউজ

ইফতার বাজারে ক্রেতাদের ভিড়

প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  জহিরুল হক মিলন, ফেনী

ফেনীতে রমজানের প্রথম দিন থেকেই হোটেল রেস্তোরাঁয় ইফতার কেনাবেচায় উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। প্রথম রোজার দিন থেকেই প্রতিনিয়ত সকাল থেকে ফেনী শহরের ট্রাংক রোডে নবী রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বিরিয়ানি হাউজ, রহমানিয়া হোটেল, ইন বিসমিল্লাহ, নাহার চৌধুরী চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, হোটেল সাউদিয়া, জেল রোডে ফাইভ স্টার রেস্টুরেন্ট, মডেল থানার বিপরীতে সৌদি আল ফাহাম রেস্টুরেন্ট, শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কে স্টার লাইন সুইটস, বেস্ট ইন চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, বড় মসজিদ রোডে আরজু হোটেল, রেডিক্স হোটেল ও বিভিন্ন ফাস্ট ফুডের দোকানে নানা ধরনের বাহারি ইফতার বিক্রি করতে দেখা গেছে। নবী রেস্টুরেন্টে অ্যান্ড বিরিয়ানির হাউজের ক্রেতা প্রবাসী জয়নাল আবেদীন জানান, দীর্ঘ দিন পর দেশে এসেছি। তাই বাসায় কয়েক পদের ইফতার তৈরি করা হয়েছে, তবুও পরিবারের সবার সাথে ইফতার করতে নবী হোটেলে এসেছি বাড়তি কিছু ইফতারি আইটেম নেয়ার জন্য। কিন্তু দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ইফতার কিনতে হয়েছে। এখানে বিভিন্ন রকম মুখরোচক ইফতার পাওয়া যায়। ফেনী শহর ঘুরে দেখা যায়, একদিকে প্রথম রমজান অন্যদিকে সরকারি বন্ধের দিনে শহরের বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরাঁর সামনে ভোজন রসিকদের দীর্ঘ লাইন। একদিকে রমজান অন্যদিকে ছুটির দিন তাই পরিবারের সবার সঙ্গে নানা আইটেম দিয়ে ইফতার করতে হোটেলে ভিড় করছেন ক্রেতারা।

প্রতিদিন সকাল থেকে হোটেল রেস্তোরাঁর সামনে মালিক ও কর্মচারীদের ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসতে দেখা গেছে। নির্ধারিত স্থানে শোভা পেতে শুরু করে ইফতারসামগ্রী। আর ইফতারের ঘণ্টা দুয়েক আগে থেকেই পড়ে বেচাকেনার ধুম। আর পথচারীসহ যারা বাইরে ইফতার করেন তাদের জন্য আসন বিন্যাস করে রাখা হয়েছে রেস্তোরাঁগুলোতে। ইফতারের আধা ঘণ্টা আগে থেকেই শুরু হয় রেস্টুরেন্টগুলোতে চেয়ার দখলের লড়াই। এমন চিত্র প্রত্যক্ষ করা যায় বেলা শেষে। প্রতিকেজি জিলাপি ১৪০-১৮০ টাকা দইবুন্দিয়া

২৬০, ফিরনি কেজি ২৫০, চিকেন পরোটা ছোলা ১৮০ টাকা কেজি। কাবাবের মধ্যে চিকেন রেশমি কাবাব ৮০, চিকেন ফ্রাই ১০০ চিকেন স্টিক পিস ১০-১২০ চিকেন নাগেট ৮০-১০০ বিফ জালি কাবাব ২০-৪৫, বিফ স্টিক ৫০-৬০ টাকা ও বাকরখানি ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত পিস বিক্রি হচ্ছে। ইফতারের দাম বাড়ার পেছনে কারণ হিসেবে রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা বলেন, রোজা এলেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। যে কারণে ইফতারসামগ্রীর দাম বাড়াতে হয়। এছাড়া এবার ভোজ্যতেলেরও দাম বেড়েছে, তা কারো অজানা নয়। নবী বিরিয়ানির হাউজের স্বত্ত্বাধিকারী কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী জানান, দুপুর ২টা থেকে তাদের হোটেলে ভিড় করছে ক্রেতারা। বিশেষ করে উপজেলা পর্যায়ের ক্রেতারা দুপুর থেকে ভিড় করে। তবে ভোজন রসিকদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে নানা ধরনের চিকেন আইটেম। প্রথম দিন ক্রেতাদের চাপ থাকায় আসরের নামাজের আগেই শেষ হয়ে গেছে সব ইফতার আইটেম। অনেক ক্রেতা ইফতার না পাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

রোজার প্রথম দিকে সাধারণত বাসাবাড়িতে ইফতার আয়োজন থাকায় রেস্তোরাঁয় ভিড় থাকে কম। কিন্তু এবার ফেনীর সে দৃশ্যপট ভিন্ন। রোজার প্রথম দিন থেকেই রমরমা ফেনীর ইফতার বাজার। সেসব ইফতার সামগ্রী কিনে নিতে রোজাদারদের দীর্ঘ সারি প্রত্যক্ষ করা গেছে রেস্তোরাগুলোতে। রেস্টুরেন্ট ছাড়াও শহরের আনাচে-কানাচে দোকান ও ফুটপাতে ইফতার বিকিকিনি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।

এবার ইফতারের নানা আয়োজন রয়েছে। ভোজন রসিকদের কাছে প্রিয় ‘পাতলা খিচুড়ি, ভুনা খিচুড়ি তো আছেই। দিন শেষে খালি পেটে পাতলা খিচুড়ি শরীরে ভিন্ন মাত্রা জোগায়। গ্যাস্ট্রিকের জ্বালাপোড়া থেকে রেহাই পেতে পাতলা খিচুড়ি পছন্দের তালিকায় থাকে এক নম্বরে। এছাড়া রয়েছে জিলাপি, ছোলা, পেঁয়াজু। দোকানিরা জানান, প্রতিবারের মতো এবারও ঢাকাইয়া আদলে তৈরি ইফতার সামগ্রীতে মজেছেন ক্রেতারা। স্পেশালের মধ্যে রয়েছে আস্তো খাসির মাংস দিয়ে তৈরি, আস্ত মোরগের রোস্ট, কাবাব, কোয়েল-কবুতর ভুনা, মোরগ পোলাও, পেস্তা বাদামের শরবত, মোরগ মুসাল্লাম, বঁটি কাবাব, টিকিয়া কাবাব, কোফতা, চিকেন কাঠি, শামি কাবাব, শিকের কাবাব, রোস্ট, কবুতরের রোস্ট, বিফ আখনি, মুরগির আখনি, হালুয়া, হালিম, কাশ্মীরি শরবত, ইসবগুলের ভূষি, পরোটাসহ অর্ধশতাধিক জাতের ইফতার সামগ্রী।

জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও গার্ডেন রেস্টুরেন্টে পরিচালক নুরুল আফসার কবির শাহাজাদা জানান, নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে শহরে বেশিরভাগ হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে গেছে তবুও আমরা কাস্টমারদের কথা মাথায় রেখে লাভ কম হলেও হোটেল ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি, রোজাদারদের পছন্দের তালিকায় থাকে ভুনা ও পাতলা খিচুড়ি। এসবের সঙ্গে ছোলা পেঁয়াজু, বেগুনি, বাকরখানি, জিলাপি ইত্যাদি তৈরি করেছি ইফতারে এবার প্রথম দিনেই ইফতারের বাজার জমে উঠেছে।