অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন ‘বীর নিবাস’ বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাবনার বেড়া উপজেলায় এঘটনা ঘটেছে। এদিকে ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দিয়ে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। কমিটিকে দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। গত শনিবার পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শরিফ আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলমকে দায়িত্ব দিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটিকে দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মুজিববর্ষে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস নামে সারা দেশে ৩০ হাজার একতলা পাকা বাড়ি নির্মাণ করছে সরকার। নীতিমালা অনুসারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সভাপতি ও সমাজসেবা কর্মকর্তা সদস্য সচিব হিসেবে বরাদ্দ কমিটি করে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা বাছাই করবেন। বীর নিবাস বরাদ্দ নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, সরকারি আবাসন কিংবা ভূমির সুবিধা পাননি, এমন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা বা পরিবার বীর নিবাসের বরাদ্দ পাবেন। যুদ্ধাহত, প্রতিবন্ধী হলে অগ্রাধিকার পাবেন। আবেদনকারীকে অবশ্যই অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল হতে হবে। কিন্তু বেড়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসার বীর নিবাস বরাদ্দ কমিটির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম তার বাবা মৃত মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন ফকিরের নামে ছোটভাই শফিউদ্দিন ফকিরের জন্য বীরনিবাসের একটি বাড়ি বরাদ্দ নিয়েছেন। বাড়িটি নির্মাণ শেষে এখন হস্তান্তরের অপেক্ষায় রয়েছে। উপজেলার রূপপুর ইউপির কাজীরহাট গ্রামে বীরনিবাসের বাড়ি বরাদ্দ পাওয়া শফিউদ্দিন ফকির সরকারি চাকরিজীবী। তিনি কাজীরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। বাড়ির পাশেই তিনতলা বাড়িতে থাকেন তার বড় ভাই বেড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। এ ব্যাপরে রূপপুর ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাজহারুল ইসলাম মোহন বলেন, বাড়ি বরাদ্দের পুরো প্রক্রিয়াই অনিয়মের মধ্য দিয়ে হয়েছে। কারণ, আবুল হোসেন ফকির মুক্তিযোদ্ধাই নন। তিনি ভারতেও প্রশিক্ষণে জাননি, কোনোদিন মুক্তিযুদ্ধ করেছেন বলেও শুনিনি। অথচ এই সব পরিবারের লোকজন মুক্তিযোদ্ধার সুবিধা ভোগ করছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা বঞ্চিত হচ্ছে। বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবু বলেন, সমাজসেবা কর্মকর্তার ক্ষমতা ব্যবহার করে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি কেন নিতে হবে, আমার বোধগম্য হয় না। এটি লজ্জারও বিষয়। বেড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার পরিবারে বীর নিবাস বরাদ্দ আমি একা দেইনি। কমিটি যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বীরনিবাস বরাদ্দ কমিটির সভাপতি সবুর আলী বলেন, কমিটির সবার মতামতের ভিত্তিতেই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, অনিয়ম হয়নি।