সূর্যমুখী ফুল চাষে আগ্রহ বাড়ছে

প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শামছুজ্জামান বাবুল, নান্দাইল (ময়মনসিংহ)

সূর্যমুখী ফুল চাষে ঝুঁকছেন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার কৃষককেরা। কৃষি প্রণোদনায় সূর্যমুখী ফুল চাষ করে সফলতা পেয়ে চাষিদের মুখে ফুটেছে আনন্দের ঝিলিক। সূর্যমুখী চাষে আগামীর স্বপ্ন বুনছেন দর্শনার্থীসহ এ অঞ্চলের কৃষকরা। সরেজমিন দেখা গেছে নান্দাইল উপজেলার মুশুল্লী এলাকায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সবুজ সূর্যমুখী গাছে হলুদ রঙের ফুলের সমারোহ। সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন ভিড় করেছেন শতশত দর্শনার্থীরা। এ যেন সূর্যমুখী ফুলের রাজ্যে অগুনিত সূর্যের ঝলকানি। ৪-৬ ফুট উচু গাছগুলো গোল আকৃতির একেকটি ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অত্যন্ত মনোরম এক দৃশ্য ফুটে উঠেছে। মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সূর্যমুখী ফুল থেকে। মৌ মৌ গন্ধে চারপাশে বইছে বসন্তের হাওয়া। প্রাকৃতিক এই অপরূপ সৌন্দর্য আরো বেশি মুগ্ধতায় পরিপূর্ণ করেছে বিভিন্ন রঙের প্রজাপতি ও পাখিরা। এক ফুল থেকে বইছে আরেক ফুলে। যেন সূর্যমুখী ফুলের রাজ্যে প্রজাপতি ও ছোট পাখিদের মেলা। প্রতিদিন এসব সৌন্দর্য উপভোগ করতে শত শত দর্শনার্থী ভিড় করছেন।

জানা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সূর্যমুখী চাষাবাদ দিন দিন বেড়েই চলেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে নান্দাইল উপজেলার মুশুল্লী ইউনিয়নের উত্তর মুশুল্লী গ্রামের নাঈম ইসলাম ৪৫ শতক, শফিকুল ইসলাম ৪৫ শতক, পাছ মুশুল্লী গ্রামের প্রকৌশলী শফিকুর রহমান ৩৩ শতক, চকমতি গ্রামের মো. শাহজাহান ৩০ শতক, আবুল কালাম ৩০ শতক, আরজু মিয়া ২৫ শতক ও মাইজহাটি গ্রামের নুরুল ইসলাম মাস্টার ৩০ শতক জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। চাষিরা জানান, কৃষি প্রণোদনায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি অন্যরকম আনন্দ উপভোগ করছেন। সূর্যমুখী চাষে আগামীর স্বপ্ন বুনছেন তারা। ওই ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইয়াহিয়া খন্দকার ও হোছনে আরা জানান, নির্মল বাতাস ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন দর্শনার্থীরা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি নিজেকে ক্যামেরাবন্দি করছেন অনেকেই। আর এমন দৃশ্য দেখে চাষিরাসহ আশপাশের এলাকার কৃষকরাও সূর্যমুখী ফুল চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক জানান, তৈল ফসল আবাদ বৃদ্ধিতে সূর্যমুখী একটি সম্ভাবনাময় ফসল। কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় এ বছর অত্র উপজেলায় সূর্যমুখী আবাদ অর্জন সম্ভব হয়েছে। সূর্যমুখীর প্লটে বীজ, সারসহ সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান জানান, কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এ উপজেলায় ২৫ জন কৃষক প্রায় ২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুল আবাদ করেছেন। আমাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকদের আরো বেশি আগ্রহ বাড়ছে সূর্যমুখী ফুল চাষে। প্রতি হেক্টর জমিতে ১.৬ থেকে ১.৮ মেট্রিকটন ফলন হবে বলে আশা করছি।