উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

দৃষ্টিনন্দন বাগানে রোগীদের স্বস্তি

প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সিদ্দিক হোসেন, বীরগঞ্জে (দিনাজপুর)

ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়কের পাশে অবস্থিত চাকাই হাসপাতাল নামে পরিচিত সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার মান নিশ্চিত করতে ২০১৩ সালে ৩১ থেকে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হিসেবে যাত্রা শুরু করে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি। এরপর সরকারের নানান উদ্যোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ধাপে ধাপে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে থাকে। চিকিৎসক ও কর্মচারীদের আন্তরিকতা এবং সেবা প্রদানে চিকিৎসকদের মানবিক আচরণের কারণে এলাকার গন্ডি পেরিয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটির সুনাম। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিরাপাদ স্বাভাবিক নিরাপদ প্রসব এবং জরায়ুর মুখ পরীক্ষার জন্য ভায়া স্কিনিং পরীক্ষার ক্ষেত্রে জাতীয়ভাবে পুরস্কার পেয়েছে। এবছর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দৃষ্টিনন্দন করে তোলার লক্ষ্যে ফাঁকা জায়গাসহ আনাচে কানাচে বিভিন্ন জাতের ফুলের গাছ লাগানোর ফলে পাল্টে গেছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির দৃশ্য। ফাঁকা জায়গার পাশাপাশি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বারান্দাজুড়ে টবে সাজানো নানারকম পাতাবাহারের গাছ। অপরদিকে হাসপাতালের অপরিত্যক্ত কিছু জায়গায় বপন করা হয়েছে নানা রকম শাক-সবজির গাছ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা হতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন ও বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য নানাবিধ খেলনা দিয়ে সাজানো হয়েছে এই শিশু কর্নার। রোগী এবং তাদের স্বজনদের সাথে আসা শিশুরা খানিকটা সময় মনের আনন্দে খেলায় মেতে উঠে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার ১নং শিবরামপুর ইউনিয়নের দেউলি প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা মো. রুবেল মিয়া জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার মান বেশ ভালো। সব সময় পরিষ্কার করা হয় কক্ষগুলো। এখানে সবচেয়ে ভালো লাগে ফুলের বাগানগুলো। সকালে ঘুম ভেঙে বারান্দায় দাঁড়িয়ে যখন ফুলের বাগানের দিকে তাকিয়ে থাকি তখন প্রাণটা জুড়িয়ে যায়। নিজেকে আর অসুস্থ মনে হয় না। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার আফরোজ সুলতানা লুনা জানান, ২০২০ সালে সারা দেশে ৮টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতে স্বাভাবিক নিরাপদ প্রসবের ক্ষেত্রে পুরস্কার পাই। ২০২২ সালে ভায়া স্কিনিং পরীক্ষায় আমাদের ঝুড়িতে জাতীয়ভাবে আরও একটি পুরস্কার যোগ হয়। সেখানে আমরা সারা দেশে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করি। এছাড়াও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আরও কিছু পুরস্কার প্রাপ্তি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে গর্বিত করেছে। আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেক আগে থেকে ফুলের বাগান ছিল। তবে এ বছর বাগান বর্ধিত করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরো ক্যাম্পাস বিস্তৃৃত করা হয়েছে।

এ কারণ হচ্ছে রোগীরা যখন সেবা নিতে আসে তখন তারা প্রথমে দেখে সেবার মান এবং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে পরিবেশ মনোরম কি না। বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. মোহাম্মদ মহসীন বলেন, মানুষকে সুস্থ করে তোলার সাথে তাদের মনের সুস্থতাও ধরে রাখার জন্য এ বাগান তৈরির মূল উদ্যেশ্য। একজন রোগী যদি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চার পাশে বাগান আর ফুলের ছড়াছড়ি দেখে তাহলে স্বাভাবিকভাবেই রোগী দ্রুত সুস্থতা লাভ করবে। আমাদের উদ্যোগগুলো ছিল সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল।