সহকারী শিক্ষকদের প্রাইভেট বাণিজ্য

প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  হুমায়ুন কবির, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)

মঙ্গলবার সকাল ৭টা। স্কুলের মূল ফটকের সামনে ছাত্র-ছাত্রীদের জটলা। দেখলে মনে হবে না যে স্কুলটি সরকারী ছুটি। কিছু শিক্ষার্থী বের হচ্ছে আবার কিছু শিক্ষার্থী তড়িঘড়ি করে স্কুলে ঢুকছে। প্রতিদিন খুব সকাল থেকে ১০/১১টা পর্যন্ত এভাবে পর্যায়ক্রমে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন শিক্ষকরা। অতিরিক্ত ক্লাসের নামে প্রাইভেটের রমরমা ব্যবসার ঘটনাটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কোলা বাজার ইউনাইটেড হাই স্কুলে।

সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ মার্চ রমজান ও ঈদ উপলক্ষ্যে সারা বাংলাদেশে সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারি ছুটি চলমান রয়েছে। কিন্তু কোলা বাজার এই হাইস্কুলটিতে দেখে বোঝার উপায় নেই স্কুলটি সরকারী ছুটি। ঘটনার দিন সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কোলা বাজার ইউনাইটেড হাইস্কুলের নতুন তিন তলা ভবনের প্রতি তলায় শ্রেণি কক্ষে ওই বিদ্যালয়ের তিনজন সহকারী শিক্ষক প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে পড়ানো হচ্ছে। এজন্য প্রতি শিক্ষার্থীকে মাসে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা গুনতে হয়। প্রতি ব্যাচে রয়েছে ৩০ থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থী। আর এসব শিক্ষার্থীর স্কুল ভবনের শ্রেণিকক্ষ ব্যবহার করে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন ঐ স্কুলের সহকারী শিক্ষক জীবন বিশ্বাস, সমরেশ দাস ও মনিরুল ইসলাম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন শিক্ষার্থী জানায়, আমার দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই স্কুলের স্যারদের কাছে টাকার বিনিময়ে প্রাইভেট পড়ে থাকি। স্যারেরা বলেছেন, কেহ জানতে চাইলে বলবা যে ‘স্কুলে অতিরিক্ত ক্লাস চলছে।’

ওই স্কুলের প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়টি অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক তরুণ বিশ্বাস বলেন, স্কুল পরিচালনা কমিটির অনুমতিতে স্কুলে পড়ানোর অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে, এ বিষয়ে স্কুলটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফিরোজ খান জানান, স্কুলে শিক্ষা নীতি অনুযায়ী দুর্বল শিক্ষার্থীদের নিয়ে অতিরিক্ত ক্লাসের অনুমতি দিলেও স্কুলের ভবন ব্যবহার করে প্রাইভেট পড়ার অনুমতি দেয়া হয়নি।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মনিরুল ইসলাম জানান, ব্যাপারটি আমি শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখি, নিয়মের অনিয়ম ঘটলে অবশ্যই ওই সব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।