ভালো নেই মৃৎশিল্পের কারিগররা

প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নীলফামারি প্রতিনিধি

কেউ তৈরি করছেন মাটির পুতুল, ঘোড়া, গরু, হাতি, ময়ূর, খেলনা, কেউ আবার তৈরি করছেন হাঁড়ি, পাতিল, থালাসহ বিভিন্ন প্রকার সামগ্রী। আবার রং-তুলি দিয়ে সেসব সামগ্রী দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় করে তুলছেন কেউ কেউ। বিভিন্ন আকার ও শৈলীতে তৈরি হচ্ছে এসব পণ্য। নীলফামারী সদরের সোনারায় ইউনিয়নের উত্তর মুসরত কুকাপাড়া গ্রামে এসব মৃৎশিল্পীর বসবাস। যুগ যুগ ধরে মাটি দিয়ে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তৈরি করে আসছেন তারা। মাটির সঙ্গে এ গ্রামের মানুষের গভীর সম্পর্ক। কিন্তু এই মানুষগুলোর ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছে না। প্রযুক্তির যুগে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসের জায়গা দখল করেছে স্বল্প দামের প্লাস্টিক ও লোহার তৈরি পণ্য। সে কারণে বাজারে মাটির তৈরি আসবাবপত্রের চাহিদা না থাকায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। সেখানকার একাধিক বাসিন্দা জানান, সকাল থেকে শুরু হয় এসব পণ্য তৈরির কাজ। এরপর রোদে শুকানো ও রং-তুলির সাহায্যে সৌন্দর্য বাড়ানো হয়। নারী-পুরুষরা সমানতালে এই কাজ করেন। তাদের সহযোগিতা করেন ছেলেমেয়েরাও। বাড়ির উঠানে বসে কাজ করছিলেন নমিতা পাল। তিনি বলেন, ‘বাপ-দাদার হাতে এসব শিখছু। এখন স্বামীর সংসারে ২১ বছর ধরি এই কাম করি। স্বামী, বেটি দুইটা, বেটা একটা ওমরাও এই কামই করে। তাও সংসার চলে না।’একই গ্রামের মৃৎশিল্পী বিকাশ চন্দ্র পাল বলেন, পুরুষদের প্রধান কাজ মাটি কিনে সেগুলো কাদা করা ও ভাটায় পোড়ানো। এরপর এসব সামগ্রী নিজ হাতে তৈরি করেন বাড়ির নারী ও ছেলেমেয়েরা। আর এসব তৈরি সামগ্রী বাজারে বিক্রি করি আমরা। কিন্তু দিন দিন চাহিদা কমে যাওয়ায় এখন হাত পড়েছে কপালে। জেলা বিসিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক হোসনে আরা খাতুন বলেন, এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের সমিতির মাধ্যমে আর্থিকভাবে সহায়তা করা যেতে পারে। তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মাটির তৈরি জিনিসপত্রের আদলে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করছে প্লাস্টিক পণ্য নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। ফলে প্রতিনিয়ত ব্যবহার কমছে মাটির তৈরি পণ্যের। এতে বিপাকে পড়েছেন এই পেশার সঙ্গে জড়িতরা। তবে আমাদের শর্ত পূরণের মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা করা যেতে পারে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, মৃৎশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারিভাবে কোনো ধরনের সহায়তার সুযোগ থাকলে তা অবশ্যই করা হবে।