শেষ চৈত্রে তেঁতে উঠেছে পদ্মা পাড়ের ঈশ্বরদী। গতকাল শনিবার ঈশ্বরদীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে বইছে মৃদু তাপপ্রবাহ। রৌদ্রতপ্ত চৈত্র মাসে দিনের বাতাস মরু অঞ্চলের মতো আগুনের হল্কা ছড়াচ্ছে। ফলে রাস্তাঘাট-হাটবাজারে লোক সমাগম কমে গেছে। আবার শীতের কারণে রাতে গায়ে কম্বল বা কাঁথা জড়িয়ে ঘুমাতে হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে ঈশ্বরদীর ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বইছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৯.৫ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ ৩৭.৬ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে।
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা লেগেছে ঈশ্বরদীসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে। দিনের বেলায় চৈত্রের খাঁ খাঁ রোদ ও গরমের তীব্রতা। আর রাতে শীত। ঈশ্বরদীসহ আশপাশের এলাকাজুড়ে গত কয়েকদিন ধরেই এমন আবহাওয়া পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস জানায়, উপজেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ অব্যাহত আছে। গত শুক্রবার বিকাল ৩টায় উপজেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে, টানা এক সপ্তাহের তীব্র তাপমাত্রায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। অসহ্য গরমে বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের। তীব্র রোদের কারণে দিনমজুর, রিকশাচালকরা কাজ করতে পারছেন না। ফলে অনেককে অলস সময়ও পার করতে দেখা গেছে। তাপপ্রবাহে রোজাদারদের কষ্টও বেড়েছে। তীব্র গরমে বয়স্ক ও শিশুরা পড়েছে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে। উপজেলা শহরের ভ্যানচালক আজাদ মিয়া বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে যাত্রী কম পাচ্ছি। আর রোজার কারণে সন্ধ্যা ও রাতেও তেমন ভাড়া মিলছে না। দিনে গরম আর রাতে যাত্রী নেই। সংসার চালানোই দায়।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান বেড়ে যাওয়ায় আবহাওয়ায় বৈপরীত্য সৃষ্টি হয়ে দিনে গরম আর রাতে শীত অনুভূত হচ্ছে। আকাশ মেঘমুক্ত থাকায় বিকিরিত তাপ ওপরে চলে যাচ্ছে।
এতে পরিবেশ দ্রুত ঠান্ডা হয়ে যাওয়ায় রাতে শীত অনুভূত হচ্ছে।
এছাড়া উত্তরের হাওয়া ধীরে ধীরে দিক পরিবর্তন করলেও সেটির প্রবাহ এখনো পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি। পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে ও বৃক্ষ নিধনের ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের ধাক্কা লেগেছে।