ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘খটাশ খটাশ’ শব্দে মুখরিত বেনারসি পল্লি

‘খটাশ খটাশ’ শব্দে মুখরিত বেনারসি পল্লি

ঈদ এলেই বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঘোলাগাড়ী কলোনির বেনারসি পল্লী ‘খটাশ খটাশ’ শব্দে মুখরিত হয়ে উঠে । ১৯৯০ সালের পর থেকে এ শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটলেও কালের আবর্তনে এখন জীবন বাঁচাতে কোনোরকম পেশাটাকে ধরে রেখেছেন এখানকার কারিগররা।

মেশিনে সুতো গোছানোর পাশাপাশি ড্রাম মেশিনের সাহায্যে সুতা প্রসেসিংসহ শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত থাকে এই পল্লীর শ্রমিকরা। বগুড়া শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে শেরপুর উপজেলার ঘোলাগাড়ী কলোনিতে বেনারশি পল্লি। বাহিরের মানুষের কাছে ঘোলাগাড়ী কলোনি ‘বেনারসি পল্লী’ নামেই সর্বাধিক পরিচিত। ঘোলাগাড়ী কলোনি ‘বেনারসি পল্লীতে’ ১৯৯০ সালের পর থেকে এ শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটতে থাকে। ধীরে ধীরে নারীরাও এ পেশায় নিজেদের যুক্ত করতে থাকেন। সাংসারিক কাজের ফাঁকে ফাঁকে এ কাজ করেন তারা। বেনারসি পল্লীতে বেনারসি, বুটিক, জামদানি, টাইটাকি, কাতান, কাতান বুটিক, পাটি নামের বাহারি ডিজাইনের শাড়ি বানানো হয়। এসব বাহারি শাড়িতে ফুটে ওঠে প্রতিটি বাঙালি ললনার প্রকৃত রূপ-মাধুরী। আর সেই শাড়ি যদি মানসম্পন্ন ও পছন্দের হয় তবে তো কথাই নেই।

বেনারসি পল্লী ঘুরে দেখা যায়, পোশাক তৈরিতে মাটি কেটে নির্দিষ্ট স্থানে চার কোনাকৃতির গর্ত তৈরি করা হয় প্রত্যেক কারখানার জন্য। গর্তে আসন গাড়েন কারিগরা। সেখানে বসেই মেশিন চালান তারা। বাহারি ডিজাইনের ক্যাটালগ লাগানো হয় প্রত্যেক তাঁত মেশিনে। সামনে জালের মতো বিছানো রঙ-বেরঙ-এর সুতা। কারিগরের হাত-পায়ের তালে তালে চলছিল তাঁত। সচল মেশিনে সুতোভর্তি কাঠ নিয়ে একহাত এপাশ-ওপাশে চালনা করছিলেন তাঁতি। কারখানার মালিক ও কারিগর আব্দুল কাদির, আজাদ মঞ্জুর জানান, ছোট থেকেই তারা এ পেশার সাথে জড়িত। ১৯৯০ সালের পর থেকে এ শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটতে থাকে। শেরপুর উপজেলার ঘোলাগাড়ী কলোনিতে তারাসহ হাতে গোনা কয়েকজন প্রথম শাড়ি বুননের কাজ শুরু করেন। প্রথমদিকে একটি শাড়ি তৈরিতে প্রায় এক সপ্তাহ সময় লেগে যেতো। তখন বিদ্যুৎ ছিলো না। গ্রামীণ অবকাঠামো ভাল ছিল না। এখন কলোনির বিদ্যুৎ রয়েছে। রাস্ত-ঘাট আগের তুলনায় বেশ ভাল। বর্তমানে দুই-তিন দিনেই তৈরি করা যাচ্ছে উন্নতমানের একেকটি বেনারসি শাড়ি। প্রথম দিকে প্রতিটি মেশিন স্থাপনে ব্যয় হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত