ঢাকা ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শপিংমলে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়

শপিংমলে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে জেলা ও উপজেলার নামি-দামি ফ্যাশন হাউজ ও শপিংমলগুলোর পাশাপাশি মার্কেট ও ছোট বড় শপিং দোকানে বাড়ছে ক্রেতা সমাগম। দোকানগুলোতে দিনে ও রাতে উপচেপড়া ভিড় বাড়ছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ফেনী : সময় যত গড়াচ্ছে ততই ঈদ কেনাকাটায় ভীড় বাড়ছে। ফেনী শহরেরর শপিংমলগুলোর পাশাপাশি মার্কেট ও ছোট-বড় শপিং দোকানে বাড়ছে ক্রেতা সমাগম। দোকানগুলোতে দিনে-রাতে উপচেপড়া ভীড় বাড়ছে। সরেজমিন গত এক সপ্তাহ শপিংমল ও ফ্যাশন হাউজগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ সামনে রেখে শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের বিভিন্ন ব্র্যান্ড হাউজ ও মার্কেটগুলোতে ব্যবসায়ীরা সাজিয়েছেন নতুন নতুন পোশাকের পসরা। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে নানা ডিজাইন ও রং-বেরঙের পোশাক নিয়ে প্রস্তুত বিক্রেতারা। থেমে নেই ক্রেতারাও। পছন্দের পোশাক বেছে নিতে এসব দোকানে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন তারা। পছন্দের পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে অনেকে কিনছেন জুতা ও অন্যান্য আনুষঙ্গ। পছন্দের পোশাক কিনতে বাবা-মায়ের হাত ধরে মার্কেটে আসছে ছোট্ট শিশুরাও। এতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখর ঈদের বাজার। শহরের এফ রহমান এসি মার্কেট, গ্র্যান্ড হক টাওয়ার, শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপণি বিতান, ফেনী গার্ডেন সিটি, ফেনী সুপার মার্কেট, সওদাগর পট্টি, দর্জি পট্টি, জগন্নাথ বাড়ী রোড, গ্রিন টাওয়ার, রহমান মার্কেট, জেবি রোড, গুলশান মার্কেট, আলী আহম্মদ টাওয়ার, শহীদ শহীদুল্লাহ সড়কের সূচনা সেন্টার, তমিজিয়া মার্কেট, ফেনী সেন্টারসহ ছোট-বড় মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ভীড় ক্রমেই বাড়ছে।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম। ক্রেতার উপস্থিতি হলেও বেচাবিক্রি আশানুরূপ নয়। ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে ক্রেতা ভীড়ের পাশাপাশি বিক্রিও বাড়বে বলে তাদের আশাবাদ।

সওদাগর পট্টির হক অ্যান্ড হক এর মালিক শরিফুল ইসলাম জানান, নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিসহ নানা কারণে ক্রেতা আসছে ঠিকই, কিন্তু বিক্রি আশানুরূপ হচ্ছে না। সকালে ভিড় কিছুটা কম থাকলেও বিকালের পর বাড়তে থাকে ক্রেতা উপস্থিতি। ঈদের বেচাকেনায় ভিড় আরো বাড়ার কথা। অনেক ক্রেতা দামাদামি করে চলে যান।

ঝুমুর শপিং স্পটের মালিক মুশফিকুর রহমান পিপুল জানান, আমাদের এখানে ভারত, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও তুরস্কের বিভিন্ন দেশের নামিদামি সুগন্ধি ও প্রসাধনী রয়েছে। ঈদে এর ব্যাপক চাহিদা হয়। দিন দিন ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে ক্রেতা আসছে। বেচাকেনার ব্যস্ততা আরো বাড়বে বলে আশা করি।

এফ রহমান এসি মার্কেটের তানজীম’স এর মালিক মাওলানা ওমর ফারুক জানান, গত কয়েক বছরের করোনার ধাক্কা কাটিয়ে এবার ঈদে ব্যবসা বেশি হওয়ার আশা ব্যবসায়ীদের। সেই অনুযায়ী এখনো বিক্রি না হলেও শেষসপ্তাহে প্রত্যাশা পূরণ হবে।

ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী বলেন, ক্রেতা সাধারণের নিরাপত্তায় বড় বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে জেলা পুলিশের পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে দেখার মতো।

নওগাঁ : ঈদ বাজার সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সরগরম থাকছে। প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস ঠেকলেও মানুষ পছন্দের পোশাক কেনার জন্য দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। গার্মেন্ট ব্যবসায়ীরা জানান, শহরে প্রতিদিন অন্তত কোটি টাকার পোশাক বেচাকেনা হচ্ছে। তবে সবমিলিয়ে জেলায় দিনে প্রায় ৫ কোটি টাকার মতো বেচাকেনা হচ্ছে। ছিট-কাপড়সহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে ভোক্তারা। ঘনিয়ে আসছে ঈদের সময়। উত্তরের জেলা নওগাঁয় বিপণি বিতানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঈদ বাজারে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সরগরম থাকছে। শহরের আনন্দ বাজার- গীতাঞ্জলি শপিং কমপ্লেক্স, দেওয়ান বাজার, ইসলাম মার্কেট ও কাপড়পট্টিতে জমে উঠেছে ঈদের বেচাকেনা। ক্রেতারা তাদের সাধ্যের মধ্যে পছন্দের পোশাক কিনতে ঘুরছেন বিভিন্ন দোকানে। দরদাম করে কিনছেন। অনেকে তাদের পছন্দের পোশাক পেয়েও যাচ্ছেন। ক্রেতাদের অভিযোগ পোশাকসহ সবধরনের পণ্যের দাম তুলনামুলক বেশি।

এবার ঈদে তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে ভারতীয় সিরিয়ালের ‘নাইরা কাট’ ড্রেস। গ্রাউন মডেলের এ জামার উপরে ও নিচের দিকে বেশি কারুকাজ। ছোটদের এ পোশাক ৩-৫ হাজার টাকা এবং বড়দের জন্য ৫-৭ হাজার টাকা দাম। এছাড়া থ্রি-পিস ৫০০ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যে। গজ কাপড় বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা। যা গত বছরের তুলনায় গজপ্রতি ১৫-২০ টাকা বেড়েছে।

জামদানি শাড়ি ৮০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা, টাঙ্গাইল তাঁতের শাড়ি ১ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং সিল্ক ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। ঈদকে কেন্দ্র করে শুধু শহরের গার্মেন্ট দোকানে এক কোটি টাকার মতো বেচাকেনা হচ্ছে। তবে জুতা ও কসমেটিকস সামগ্রিসহ অন্যান্য দোকানগুলোতে আরো প্রায় এক কোটি টাকার মতো বেচাকেনা হয়। জেলার আরো ১০টি উপজেলায় প্রতিদিন প্রায় ৩ কোটি টাকার বেচাকেনা হচ্ছে। সে হিসেবে জেলায় প্রতিদিন প্রায় ৫ কোটি টাকার বেচাকেনা হচ্ছে।

ঈদ বাজারে আসা তরুনি ফাল্গুনি বলেন, ঈদের বাজারে প্রতিবারই একটা ট্রেন্ড (হাওয়া) থাকে। যা ভারতীয় কিছু সিরিয়ালের পোশাকের প্রবণতা বাজারে দেখা যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। এবার ‘নায়রা কাট’। সাধারণ কামিজের মতো। সারারা টাইপের যে কামিজ রয়েছে একটু কারুকাজ করা। দামও মোটামুটি আছে।

সরকারি চাকরিজীবী সোহবার হোসেন বলেন, বাচ্চাদের অনুভূতি বা আগ্রহ বেশি। তাদের ইচ্ছা পূরণে বাজারে আসা। বাজারে পোশাকের দাম অনেকটা বেশি মনে হচ্ছে। চাকরিজীবীদের জন্য তো কষ্টকর। তারমধ্যে যারা সাধারণ মানুষ রয়েছে তাদের জন্য আরো বেশি কষ্টকর।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত