ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বোরো ধানে শীষ মরা রোগ

বোরো ধানে শীষ মরা রোগ

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বোরো মৌসুমে ধানের শীষ মরা রোগ দেখা দিয়েছে। শীষ মরা রোগ প্রতিরোধে ওষুধ ছিটিয়েও কাজ হচ্ছে না। ফলে ফলন বিপর্যয় নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার হাজারো কৃষক। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার প্রতিটি জমিতে বোরো ধান খুব ভালো হয়েছে। কৃষকরা বলেছেন, রোজার ঈদের কয়েক দিন পরই হয়তো বোরো ধান কাটা শুরু হবে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষকের লাগানো ব্রি-২৮ ধান পাকতে শুরু করেছে। ধানের চারাগুলো দেখতে পাকা মনে হলেও বাস্তবে অধিকাংশ ধান সম্পূর্ণ শুকিয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে। আবার কিছু কিছু জমিতে ধানের শীষ ভেঙে নুয়ে পড়ছে।

এরই মধ্যে হঠাৎ করে উপজেলার পৌরসভার ফালগুনকরা, পূর্ব ধনমুড়ি, চান্দিশকরা, নাটাপারা, কনকাপৈত ইউনিয়ন লাউলাইশ, পাঠানপাড়া, তাড়াশাইল, মরকটা, বাতিসা ইউনিয়ন কালিকসার, কুলিয়ারা, দেবীপুর, সোনাপুর, চিওড়া ইউনিয়ন ডিমাতলী, সুজাতপুর, দুর্গাপুরসহ বিভিন্ন মাঠে বোর ধানে ব্যাপক হারে শীষ মরা রোগ দেখা দিয়েছে। কৃষকদের দাবি, ধানের শীষ মরা রোগ প্রতিরোধ করতে বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো ফল মিলছে না। ফলে বোর ধানে ফলন বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। এতে করে ধান রক্ষায় এবং লোকসানের আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। পৌরসভার কৃষক আবদুর জাব্বার চৌধুরী জানান তার বিধান ২৮ জাতের প্রায় ৩ বিঘা জমির অনেক ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ ছিটিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। ফলে ধানের ফলন বিপর্যয় হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষক। তারা বলছেন, আগাম জাতের মোটা ধান ভালো থাকলেও প্রতিবছর বোরো ধান পাকার আগেই মাজরা কিংবা ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে শীষ মরে যায়। এতে ফলন বিপর্যয়ের কারণে লোকসান হয় তাদের। এবারও একই রকম অবস্থা দেখা দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় চলতি বছর ১২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। টুপার, নাটিভো, ব্লাস্টিন ওষুধ পরিমাণ মতো ধানক্ষেতে ছিটালে ব্লাস্ট থেকে রেহাই পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ মৌসুমে এই অঞ্চলের যেসব কৃষকেরা উচ্চফলনশীল ব্রি ধান-২৮, ব্রি ধান-২৯, ব্রি-১৬, ধান আবাদ করেছেন, তাদের ধানে ব্লাস্ট রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি বলে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা জানান। তারা আরও জানান, চলতি মৌসুমে কৃষকদের বিভিন্নভাবে ধান চাষে পরামর্শ দিয়েছি। বিভিন্ন সেমিনার, মিটিং করে কৃষকদের সচেতন করা হয়েছে। ফলে কোথাও ব্লাস্ট রোগ থাকলে কারেন্ট পোকার নজির নেই। তবে দুই-একটি জমিতে মাজরা পোকার আক্রমণের কারণে কিছু ধানের শীষ মরে যাচ্ছে, যা পরিমাণে খুবই অল্প। এতে ধানের কাঙ্ক্ষিত ফলনে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত