ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গাইবান্ধায় এবারও ঈদে নেই বিশেষ ট্রেন

গাইবান্ধায় এবারও ঈদে নেই বিশেষ ট্রেন

গাইবান্ধা থেকে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগের জন্য রয়েছে দুটি ট্রেন ‘আন্তঃনগর লালমনি এক্সপ্রেস’ ও ‘আন্তঃনগর রংপুর এক্সপ্রেস’। ট্রেন দুটি এই জেলার উপর দিয়ে সপ্তাহে ছয় দিন চলাচল করে। কিন্তু যাত্রীর চাপ থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ দেড় যুগেও ট্রেনের সংখ্যা বাড়েনি। এছাড়া এবারও ঈদে থাকছে না বিশেষ ট্রেন। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আসন্ন ঈদে এই রুটের ‘আন্তঃনগর লালমনি এক্সপ্রেস’ ও ‘আন্তঃনগর রংপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনে দুইটি করে অতিরিক্ত বগি (কোচ) বাড়ানোর কথা রয়েছে। সূত্র জানায়, ট্রেন দুটির মধ্যে আন্তঃনগর ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনে ৫৯৩টি আসনের মধ্যে গাইবান্ধা রেলস্টেশনসহ তিন স্টেশনের জন্য বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা ১৬৬টি। যার মধ্যে গাইবান্ধা রেলস্টেশনে ৮৭টি, বোনারপাড়ায় ৪০ এবং বামনডাঙ্গায় ৩৯টি আসন। এছাড়া ‘আন্তঃনগর রংপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ৯৪০টি আসনের মধ্যে গাইবান্ধা রেলস্টেশনসহ তিন স্টেশনের জন্য বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা ১৪১টি। যার মধ্যে গাইবান্ধা রেলস্টেশনে ৬৭টি, বোনারপাড়ায় ৪০ এবং বামনডাঙ্গায় ৩৪টি আসন। গাইবান্ধার সচেতন মহল, যাত্রী ও স্থানীয়দের আক্ষেপ, দীর্ঘ দেড় যুগ আগে ২০০৪ সালে এ জেলার ওপর দিয়ে একটি ট্রেন ও ২০১১ সালে আরেকটি ট্রেন দেওয়া হয়। এরপর দীর্ঘ এক যুগ পার হলেও এই রুটে আর কোনো নতুন ট্রেন দেওয়া হয়নি কিংবা গাইবান্ধার জন্য আসন সংখ্যাও বাড়ানো হয়নি। সেবার মান বাড়াতে এই পথে আরও ট্রেন বাড়ানো ও আসন্ন ঈদ যাত্রায় গাইবান্ধাবাসীর জন্য বিশেষ ট্রেন চালুর দাবি করেন তারা।

গাইবান্ধা নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু আক্ষেপ করে বলেন, গাইবান্ধা জেলা শহরের মানুষ হিসেবে আমরা চরম অবহেলার শিকার। আমাদের এই রুটে নতুন ট্রেন চালুর বিপরীতে আন্তঃবিভাগ চলাচলের রামসাগর ও লোকাল ৪৮১ নামের দুটি ট্রেন অযৌক্তিক কারণ দেখিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। প্রতি বছর ঈদে দরিদ্র এ জেলার হাজার হাজার মানুষ বাড়িতে আসে। অনেক সময় তারা বাস-ট্রেনে সুযোগ না পেয়ে কাভার্ডভ্যান কিংবা মালবাহী গাড়িতে করে আসতে গিয়ে প্রাণও হারায়। উত্তরাঞ্চলের অবহেলিত জনপদ গাইবান্ধার যাত্রী সংখ্যার কথা চিন্তা করে এখানে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বিশেষ ট্রেন চালু করা অত্যন্ত জরুরি। এটি আমাদের ন্যায্য দাবি। গাইবান্ধা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার আবুল কাশেম বলেন, ঢাকার যোগাযোগে আন্তঃনগর লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে গাইবান্ধার জন্য আসন বরাদ্দ ৮৭টি এবং রংপুর এক্সপ্রেসে ৬৭টি, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। প্রতিদিন গাইবান্ধা থেকে প্রায় ৩০০ বাস ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলাচল করে। সেই অর্থে গাইবান্ধার ট্রেন চলাচলের যাত্রী সংখ্যা বিবেচনায় শুধু এই দুটি নয়, কমপক্ষে প্রয়োজন আরও চারটি ট্রেন। ঢাকা থেকে এই রুটে আরও নতুন করে চার থেকে পাঁচটি ট্রেন যোগ করা হলে এই অঞ্চলের ট্রেন যাত্রীদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।

লালমনিরহাট রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. নুরুন্নবি ইসলাম ঢাকা পোস্টকে মুঠোফোনে বলেন, আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনের সঙ্গে আরও দুটি কোচ (বগি) সংযুক্ত করার কথা রয়েছে। কিন্তু বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। লালমনিরহাটের যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী এই রুটে রাত্রিকালীন আরও একটি ট্রেন চালু করা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ‘তিন বিঘা করিডোর’ নামক একটি ট্রেন চালু হওয়ার কথা রয়েছে। সেটি চালু হলে এই অঞ্চলের মানুষের রেলসেবার উন্নয়ন ঘটবে।

রংপুর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার শঙ্কর গাঙ্গুলী মুঠোফোনে বলেন, ঈদে রংপুরে নতুন কোনো ট্রেন দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে, আসন্ন ঈদে যাত্রীদের চাপের বিষয়টি মাথায় রেখে ১৪টি কোচের ৮৪০টি আসনের ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনের সঙ্গে আরও দুটি অতিরিক্ত বগি সংযুক্ত করা হতে পারে। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রেল সেবার মান বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই রুটে যাত্রীর সংখ্যাও বাড়ছে। এই রুটে আর একটি ট্রেন দেওয়া হলে যাত্রীদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার (পশ্চিমাঞ্চল, রাজশাহী) ওয়াশিম কুমার মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, যাত্রী চাহিদা বিবেচনায় ওই রুটে ট্রেন বাড়ানো প্রয়োজন কিন্তু আমাদের সক্ষমতা কম। বর্তমানে ওই রুটে নতুন করে কোনো ট্রেন দেওয়া হচ্ছে না। তবে ঈদে লালমনি ও রংপুর এক্সপ্রেসে দুটি করে কোচ (বগি) সংযুক্ত করার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত