ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে কুয়া

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে কুয়া

মানুষ সুপেয় ও বিশুদ্ধ পানি পানের জন্য নানা রকম উৎসের ব্যবস্থা করেছে যুগে যুগে। গত শতাব্দীর অন্যতম প্রয়োজনীয় পানির আঁধার ছিলো ইন্দারা বা কুয়া। সকাল-সন্ধ্যায় গ্রাম বাংলার মা-বোনের কলসি কাঁকে নিয়ে ইন্দারা থেকে পানি আনার দৃশ্য আর দেখা যায় না। টিউবঅয়েল, গভীর নলকূপ, বিদ্যুৎচালিত মটর ইত্যাদি ব্যবহার করে মানুষ খাবার পানি সংগ্রহ করায় কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে। গ্রামীণ এ ঐতিহ্যবাহী ইন্দারা। ময়মনসিংহের গৌরীপুরেও অনেক ইন্দারা ছিলো। যখন ডোবা ও নদীর অপরিশুদ্ধ পানি পান করতো তখন পেটের পীড়াসহ নানান রোগ বালাই হতো বলেই বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে স্বচ্ছ পানির ব্যবস্থা করতেই ইন্দারা বা কুয়ার আবিষ্কার করেন। প্রাচীন বাড়িগুলোতে এখনো দেখা যায় মজে যাওয়া ইন্দারা। সরেজমিনে গিয়ে যায়, গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন এলাকার চকপাড়া মহল্লায় একটি বিশাল ইন্দারা ছিলো। যা নষ্ট হওয়ায় পুরোনো টিন দিয়ে আবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। গৌরীপুর সরকারি কলেজ ব্যবহৃত তৎকালীন জমিদার সুরেন্দ্র কুমার লাহিড়ী নির্মিত ইন্দারাটা বর্তমানে ময়লা আবর্জনার বাগাড়ে পরিণত হয়েছে। জানা গেছে, ১০-১৫ ফুট গোল গর্ত করে প্রায় ৫০-৬০ ফুট নিচ পর্যন্ত মাটি খুঁড়ে কূপ বা কুয়া বা ইন্দারা তৈরি করা হত। মাটির নিচের ঝর্না ছিল এই ইন্দারার পানির প্রধান উৎস। পাতি কূপ ও ইন্দারার মধ্যে পার্থক্য হলো, ইন্দারার নিচ থেকে উপর পর্যন্ত ইট বা রিং দিয়ে বাঁধাই করা হত আর পাতি কূপ বাঁধায় করা হত না। অনেক বাড়িতে ইন্দারার উপরে ঢাকনা লাগানো থাকত একটি লোহার চাকা। এই মাধ্যমে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ইন্দারা দিয়ে পানি উঠাত লোকজন আবার অনেকেই ইন্দারা থেকে পানি উত্তোলনের জন্য ব্যবহার করতো কপিকল। একটি ইন্দারা তৈরিতে অনেক অর্থ ও জায়গার প্রয়োজন হতো।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত