মজুরির বেলায় নারী শ্রমিকরা বৈষম্যের শিকার

প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আরিফুর রশীদ, লালমনিরহাট

কৃষিসহ পাথর ভাঙার মতো কঠিন কাজ ও চাতালে নিয়োজিতসহ কৃষি কাজে লালমনিরহাটে প্রায় কয়েক হাজার নারী শ্রমিক রয়েছে। তুলনামূলকভাবে নারীরা পুরুষের চেয়ে কাজে বেশি মনোযোগী সেই সঙ্গে পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় মজুরি কম হওয়ায় এ অঞ্চলে নারী শ্রমিকের কদর বেড়েই চলেছে। কিন্তু নারীরা একই কাজে পুরুষের সমপরিমাণ পরিশ্রম করলেও তারা পুরুষের তুলনায় মজুরি পাচ্ছেন কম। লালমনিরহাটে পুরুষদের মতো নারীদের ক্ষেত-খামারে কাজ করার তেমন একটা রেওয়াজ ছিল না। কিন্তু বর্তমানে দুর্মূল্যের বাজারে শুধুমাত্র পুরুষদের পরিশ্রমে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এ কারণে সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে পুরুষদের পাশাপশি নারীরাও ক্ষেত-খামার ও চাতালে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। তবে নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে একই কাজে পুরুষের সমপরিমাণ পরিশ্রম করলেও তারা পুরুষদের তুলনায় মজুরি পাচ্ছেন কম। সংশ্লিষ্টদের অবহেলা আর অবজ্ঞার কারণে নারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের শ্রমের ন্যায্য মজুরি থেকে। আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামে ক্ষেতে কাজ করা আসমা বেগম ও শেফালী বেগম রায় বলেন, এ অঞ্চলের নিয়ম অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত গৃহস্থের জমিতে নানা ধরনের কৃষি কাজ করতে হয়। এতে আমাদের মজুরি দেয় মাত্র ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। অথচ একই কাজে পুরুষ শ্রমিকদের দেয়া হয় ৪০০ থেকে ৪৫০টাকা।

অপরদিকে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় সহস্রাধিক নারী শ্রমিক পাথর ভাঙার মতো কঠিন কাজে নিয়াজিত রয়েছেন। কিন্তু পুরুষের তুলনায় প্রতিনিয়ত মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। মফিজন বেওয়া ও মরিয়ম বেওয়া বলেন, পুরুষদের সমপরিমাণ কাজ করেও তাদের সমান মজুরি পাই না। সদর উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের আমবাড়ী গ্রামের ক্ষেতের মালিক মিঠুল মিয়া জানান, নারীরা পুরুষের সমান কাজ করে সেটি সঠিক। কিন্তু পূর্ব থেকে বাজার যেভাবে চলে আসছে ঠিক সেভাবে দেয়া হচ্ছে মজুরি। হঠাৎ করে তো বাড়ানো যাবে না।

লালমনিরহাট শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা জানান, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও কাজের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে পারলে পুরুষের মতো তারাও কৃষিক্ষেত্রসহ সমাজের নানা কাজে ব্যাপক ভূমিকা রাখেতে পারবে। তাতে একদিকে বেকার সমস্যার সমাধান হবে অপরদিকে নারী-পুরুষ মিলে দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নেয়া সহজ হবে।