ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়ক

২৭ বছরে প্রথম স্বস্তির ঈদযাত্রা

২৭ বছরে প্রথম স্বস্তির ঈদযাত্রা

বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে দীর্ঘ ২৭ বছরের মধ্যে ঈদযাত্রায় স্বস্তিতে বাড়ি ফিরেছে ঘরমুখো মানুষ। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ও স্থানীয় প্রশাসনের সার্বক্ষণিক তৎপরতার কারণে দীর্ঘদিন পর ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন হওয়ায় পরিবহণ চালক-যাত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা খুব খুশি। জানা গেছে, ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রতিটি ঈদযাত্রায় যানজট ছিল নিত্যসঙ্গী। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ধেরুয়া থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত যানজট লেগেই থাকত। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মহসড়কে পরিবহণ ও যাত্রী সাধারণকে অপেক্ষা করতে হতো। ঢাকা থেকে সেতু পার হতে তিন ঘণ্টার রাস্তা পারি দিতে ৮ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত লাগত। যাত্রী সাধারণ চরম ভোগান্তির শিকার হতো। প্রতিটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় মর্মস্পর্শী মৃত্যুর মিছিল ছিল নিত্যসঙ্গী। ঈদযাত্রায় মহাসড়কে চলাচলকারী পরিবহণ ও যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা সব সময় তটস্থ থাকত। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মহাসড়কের স্ব স্ব এলাকায় অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ, পানীয় জলের সংস্থানসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সচেষ্ট থাকত। যাত্রী সাধারণের প্রয়োজনে গড়ে উঠেছিল বেশ কিছু অস্থায়ী দোকানপাট। অনেকে পানি ও হালকা খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির যাত্রীদের কাছে বিক্রি করতেন। এ বছর পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ যাত্রী পদ্মা সেতু দিয়ে বাড়ি গিয়েছেন। এছাড়া মহাসড়ক ঢাকা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চারলেনে প্রশস্তকরণ করা এবং বাকি সাড়ে ১৩ কিলোমিটার মহাসড়কে ডিভাইডারবিহীন দুই লেন একমুখীকরণ ও ঢাকাগামী পরিবহণগুলো ভূঞাপুর লিংক রোড ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়ায় দীর্ঘদিনের যানজটের অবসান হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যাও প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। শ্যামলী পরিবহণের চালক আফছার আলী, এসআই পরিবহণের চালক রাকিবুল ইসলাম ও সুপারভাইজার ফরহাদ আলী, ঈশাখাঁ পরিবহণের চালক মোকাদ্দেস, ঈশ্বরদী এক্সপ্রেসের সুপারভাইজার রায়হান, ন্যাশনাল ট্রাভেলসের চালক আহাম্মদ আলীসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও সুপারভাইজাররা জানান, এ মহাসড়ক তাদের কাছে যানজটের অপর নাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল। মহাসড়ক চারলেন হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা ও পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এবার স্বস্তিতে যাতায়াত করতে পেরেছেন। মহাসড়কে যাতায়াতকারী বিভিন্ন পরিবহণের যাত্রী শহিদুল, সাথী বেগম, সাদ্দাম হোসেন, বকুল তরফদার, কাকলী আক্তারসহ অনেকেই জানান, গত ঈদে তারা ৭-৮ ঘণ্টার জটে পড়েছিলেন। এবার মহাসড়কে যানজট না থাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি যেতে পারছেন। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করার ফলে এবার ভোগান্তি হয়নি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত