ইরি-বোরো ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক

প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্বাস আলী, নওগাঁ

নওগাঁয় ইরি-বোরো মৌসুমের ধান কাটামাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এবার ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে যেন হাসির ঝিলিক। আবহাওয়া ভালো থাকলে সুষ্ঠুভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারবেন তারা। তাদের দাবি রোপণ থেকে শুরু করে ঘরে উঠানো পর্যন্ত শ্রমিক, সার, কীটনাশক ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় বেড়েছে উৎপাদন খরচ। খোলা বাজারে দাম ভালো পেলে লাভবান হতে পারবেন তারা।

কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ বছর জেলায় ১ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। যা থেকে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ ৫৪ হাজার ৫৪০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভবনা রয়েছে। যা থেকে প্রায় ৮ লাখ ৩৬ হাজার ২৬০ মেট্রিকটন চাল উৎপাদন হবে।

শষ্য ভাণ্ডার খাত উত্তরের বরেন্দ্র জেলা নওগাঁর মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন। সোনালী ধানের শীষে ভরে উঠেছে বিস্তীর্ণ মাঠ। পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত চারিদিক। ইরি-বোরো মৌসুমের ধান ঘরে উঠাতে কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন কৃষক-কৃষাণীরা। এ বছর জিরাশাইল, ব্রিআর-২৮, ৪৮, সুবর্ন লতা ও হাইব্রিড জাতের ধানের আবাদ করেছে চাষিরা। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানে তেমন কোনো রোগবালাই হয়নি। এছাড়া ফলনও হয়েছে ভালো। এবার বাম্পার ফলনের আশা চাষিদের। ন্যায্য মূল্য পেলে এ জেলার মানুষের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে আমূল পরিবর্তন ঘটবে।

চাষিরা জানান, সার, কীটনাশক, জ্বালানি তেল ও শ্রমিকের দাম বেড়ে যাওয়ায় ফসল উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সে হিসেবে জমিতে ধান রোপণ থেকে শুরু করে ঘরে উঠানো পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিঘাপ্রতি ফলন হচ্ছে প্রায় ২২-২৬ মণ। কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে সুষ্ঠুভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। বাজারে ভালো দাম পেলে (১৪০০ টাকা) লাভবান হতে পারবেন তারা। এতে করে তারা গত বছরের প্রাকৃতিক দূর্যোগে বোরো ফসলের যে ক্ষতি হয়েছিল তা পুশিয়ে নিতে পারবেন।

সদর উপজেলার চকপ্রসাদ গ্রামের কৃষক ফিরোজ হোসেন বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় ধানের ফলনও ভালো হয়েছে। ধানে পোকার আক্রমণ কম হয়েছে। এ কারণে কীটনাশকের খরচও কম হয়েছে।

একই গ্রামের কৃষক নাহিদ বলেন, প্রতি বিঘাতে ফলন হচ্ছে ২২-২৬ মণ। এ বছর সার, কীটনাশক, জ্বালানি তেল ও শ্রমিকের দাম বেড়ে যাওয়ায় ফসল উৎপাদন খরচ বেড়েছে। খোলা বাজারে ধানের দাম ১৪০০ টাকা হলে আমরা লাভবান হতে পারব।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বোরো আবাদের জন্য জেলার ৪০ হাজার জন কৃষককে ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ৫ কেজি এমওপি সার প্রণোদনা হিসেবে কৃষি অফিস থেকে প্রদান করা হয়। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে পাঁচ শতাংশ ধান কাটা-মাড়াই হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে কৃষকরা সুষ্ঠুভাবে ধান ঘরে তুলতে পারবেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ধান ঘরে তুলতে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।