সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে অবাধে চলছে মাছ শিকার

প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলমগীর সিদ্দিকী, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)

সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন সুন্দরবনের সংরক্ষিত এলাকায় ঢুকে অবৈধভাবে মাছ শিকারের অভিযোগ উঠেছে। বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট স্টেশনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে জেলেরা ওই অভায়রণ্যে অবাধে বিচরণ করে মাছ ও কাঁকড়া শিকার করছে। এতে হুমকির মুখে সুন্দরবনের মাছের প্রজননক্ষেত্র। জেলেরা জানান, সুন্দরবনের অভয়ারণ্য দোবেকীর কিছু অংশ পাকড়াতলীর চর, নোটাবেকী, আঙরাকোনা, বালিঝাকি, পুস্ফকাটি, নোটাবেকী, ফিরিঙ্গি, ডিঙিমারী, ইলিশামারীসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫ থেকে ৬শ’ জেলে নৌকা অবাধে মাছ ধরছে। তবে বন বিভাগের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়েছে সুন্দরবনের সংরক্ষিত এলাকায় মাছ ধারার দায়ে এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন জেলেকে আটক করা হয়েছে। জানা যায়, সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন টহল ফাঁড়িগুলোর অধীনে বেশ কয়েকটি খাল মাছের প্রজননক্ষেত্র হিসেবে সংরক্ষিত থাকে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও মাছের প্রজননের জন্য বনজীবীদের এসব খাল ও নদী প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন সুন্দরবনের সংরক্ষিত এলাকায় ঢুকে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে বেশ কয়েকটি জেলে নৌকা। মাঝে মধ্যে বনবিভাগের লোক দেখানো অভিযানে কিছু জেলেকে আটক করা হলেও অধিকাংশ জেলে থেকে যাচ্ছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ ব্যাপারে জেলে সুমন গাজী নামে এক জেলে বলেন, অভয়ারণ্যে মাছ ধরতে কিছু বাড়তি টাকা খরচ হয়। কিন্তু অল্পসময়ে অনেক মাছ পাওয়া যায়। বড়িগোয়ালিনীর জেলে সাহবাজ বলেন, বন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করতে পারলে বেশি লাভবান হওয়া যায়। এ বিষয়ে বুড়িগোয়লিনী ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম বলেন, এসব অভিযোগ সঠিক নয়। আমাদের জানা মতে, অভয়ারণ্য এলাকায় মাছধরার কোনো জেলের নৌকা নেই। সেখানে কোনো জেলেকে ঢুকতে দেয়া হয় না। তবে পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এ কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, সুন্দরবনের সংরক্ষিত এলাকায় মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষেধ। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও মাছের প্রজননের জন্য অভয়ারণ্য চিহ্নিত খালগুলোতে বনবিভাগের নিয়মিত নজরদারি থাকে। সেখানে অবৈধভাবে প্রবেশ করে কেউ মাছ ও কাঁকড়া শিকার করতে পারে না। তিনি জেলেদের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, বনকর্মীরা কেউ কোনোভাবেই এর সঙ্গে জড়িত নন। এসব অভয়ারণ্য এলাকায় যারা মাছ ধরে তারা অবৈধভাবেই বনে প্রবেশ করে থাকে। সংরক্ষিত এলাকায় মাছ ধরার দায়ে এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন জেলেকে আটক করে বন আইনে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।