অভয়নগরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন

প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মল্লিক খলিলুর রহমান, অভয়নগর (যশোর)

যশোরের অভয়নগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বোরো ফসলের মাঠে এখন স্বর্ণালি ধানের দোলায় ধুলছে কৃষকের স্বপ্ন। যতদূর চোখ যায় ঢেউয়ের মতো বাতাসে দুলছে সোনালি ধানের শীষ। যদিও আল্প কিছু জায়গায় বোরো ধান ব্লাস্ট রোগে ক্ষতি হয়েছে। এরপরেও বাম্পার ফলনের আশায় ধান কাটা শুরু করেছে কৃষক পরিবার। ইরি-বোরো ধান লাভজনক ফসল হওয়ায় বোর মৌসুমকে ঘিরেই নানা স্বপ্নে বিভোর থাকে কৃষক পরিবার। আর এই সোনালি স্বপ্ন লুকিয়ে থাকে স্বর্ণালি ধানক্ষেতের মাঝে। স্থানীয় বোরো চাষিদের স্বপ্ন পূরণে এর আগে ধান কেটে বাড়ী নেয়া শুরু করে দিয়েছেন কৃষক পরিবার। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় মোট ১৪ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে পৌরসভা এলাকায় ১৫শ হেক্টর ও উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ১২ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে।

যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৪৬৩ মেট্রিক টন। তবে বোরো ধানের লক্ষমাত্রার চেয়েও বেশি উৎপাদন হবে। কৃষকরা জানান, আগামী মাত্র ৬/৭ দিন যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকে কৃষকরা তাদের স্বপ্নের সোনালি ফসল বাড়ি তুলতে পারবে বলে মনে করেন। স্থানীয় কৃষকরা আরও জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ও পরামর্শে আবাদকৃত ইরি-বোরো ধান গতবারের চেয়ে ভালো ফলন হবে বলে আশা করি। যদিও কিছু কিছু অঞ্চলে ব্লাস্ট রোগে বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। আর যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে তাহলে এবার বাম্পার ফলনের আশা করা যায়। উপজেলা চলশিয় ইউনিয়নের কৃষক ও ইউপি সাবেক সদস্য নিজাম উদ্দিন সরদার বলেন, আমি ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। এর মধ্যে প্রায় ১ বিঘা জমির ধান ব্লাস্ট রোগে ক্ষতি হয়েছে। এ বাদে বাকি বোরো ধান আবাদি জমিতে বেশ ভাালা হয়েছে। আর যদি ৫/৬ দিন কোনো প্রকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে ভালোভাবে ধান ঘরে তুলতে পারব। পৌরসভার ৫নং ওযার্ডের বুইকারা গ্রামের কৃষক মোহাম্মাদ বলেন, প্রায় ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। গত মৌসুমের চেয়ে এবার ধানের ভালো ফলন হয়েছে। সময় মতো পানি দেয়, কীটনাশক ও বালইনাশক স্প্রে করায় ধানের কোনো ক্ষতি হয়নি। ধান প্রায় ঘরে উঠে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. লাভলী খাতুন বলেন, বোরো আবাদের সময় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ইরি-বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ধানে একটি রোগ দেখা দিয়েছিল। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের সঠিক পরামর্শে স্থানীয় বোরো চাষিরা প্রতিরোধক বালাইনাশক স্প্রে করা ও কীটনাশক দেয়ায় ধান গাছের রোগটি নিয়ন্ত্রণে আসে। এবং পাশ্ববর্তী এলাকার চেয়ে এ উপজেলায় বোরো ধানের রোগ কম হওয়ায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের যে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তার চেয়েও বেশি গুণ ধান উৎপাদন হবে। তিনি আরও বলেন, উৎপাদিত বোরো ধানের নমুনা সংগ্রাহ করে দেখেছি। এ মৌসুমে হাইব্রিড ধান বিঘাপ্রতি প্রায় ২১ থেকে ২৯ মণ ও অন্যান্য জাতের ধান বিঘাপ্রতি ২৩ থেকে ২৭ মণ হবে।