মসজিদে ধান রাখার অভিযোগ

প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম)

মধ্যপ্রাচ্যের অনুদানে রাঙ্গুনিয়ায় নির্মিত একটি মসজিদের কার্যক্রম বন্ধ রেখে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। মসজিদটিতে রাখা হচ্ছে ধান ও গাছ। এমনকি মসজিদের নামের একটি মিটারও ব্যবহার করছে পার্শ্ববর্তী একটি পরিবার। মসজিদজুড়ে অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা পরিবেশের সৃষ্টি হয়ে ধুলোর আস্তরণ পড়েছে পবিত্র কোরআন শরিফে। এই নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মসজিদটি উন্মুক্তের দাবিতে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ জানালে তিনি ইসলামী ফাউন্ডেশনকে তদন্তের দায়িত্ব দেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দক্ষিণ নিশ্চিন্তাপুর মুমেনাবাদ এলাকার জনৈক সৈয়দ আহমদের তত্ত্বাবধানে মধ্যপ্রাচ্যের সারজার একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অনুদানে ২০১১ সালে মসজিদে হযরত উম্মে ছালমা (রা.) নামে এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু উদ্বোধনের কিছুদিন পর থেকেই এটি বন্ধ করে তালাবদ্ধ রেখে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করার অভিযোগ এলাকাবাসীর। এতে একদিকে যেমন মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে মসজিদ থাকার পরও মসজিদে নামাজ আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ। গতকাল বুধবার লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মসজিদ পরিদর্শনে যান উপজেলা ইসলামী ফাউন্ডেশন ফিন্ড সুপারভাইজার মো. আবু তাহের ও এমসি মৌওলানা কাজী জহিরুল ইসলাম। তারা জানান, মসজিদের বিভিন্ন তথ্য নেয়া হয়েছে। তবে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা সৈয়দ আহমদের মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি। ইউএনও বরাবর রিপোর্ট প্রদান করা হবে।

এ সময় দেখা যায়, মসজিদের ভেতর ছড়িয়ে থাকা ধান ও ছাগলের মলমূত্রে ভরা। মসজিদের এক কোণে রাখা দুটি কোরআনের ওপর ময়লায় স্তূপ জমেছে। পাশে বস্তা করে রাখা হয়েছে ধান। মানুষের পদচারণ না থাকায় বাইরে থেকে লম্বা হওয়া ঘাস ভেতরে প্রবেশ করেছে। মসজিদের টয়লেটও পরিত্যক্ত হয়ে আছে। মসজিদের বিদ্যুতের মিটারটিও ব্যবহার করছে পার্শ্ববর্তী একটি পরিবার। মসজিদের মাঠে সবজি চাষ করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, এলাকার স্বার্থে অতি দ্রুত মসজিদ কার্যক্রম চালু করা প্রয়োজন।

আবদুল খালেদ নামে একজন বলেন, মসজিদটি বন্ধ থাকায় বিকল্প মসজিদ হিসেবে আমাদের দুটি পাহাড় টপকে অন্য মসজিদে যেতে হয়। ৫০ থেকে ৬০ পরিবার আমরা কষ্টে আছি।

আমেনা বেগম নামে এক মহিলা জানান, মসজিদ চালু হলে আমাদের শিশুরা মক্তবে আরবি পড়তে পারবে, নামাজ পড়তে পারবে।

তত্ত্বাবধায়ক সৈয়দ আহমদের ভাইয়ের ছেলের বউ সাইরা বেগম বলেন, কী কারণে মসজিদ বন্ধ রাখা হয়েছে জানি না। তবে আমার ছেলেরা মসজিদে আজান দেয়। নামাজ পড়ে। তিনি মসজিদটি পরিপূর্ণভাবে চালু করার আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গনি ওসমানী বলেন, নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদ উম্মুক্তের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। এই বিষয়ে ইসলামী ফাউন্ডেশনকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদের তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।