কুষ্টিয়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে ছয় খুন

প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এ.এইচ.এম.আরিফ, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ায় এক সপ্তাহে ৬ খুনের ঘটনায় কুষ্টিয়াবাসীর মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। একটি খুনের সংবাদ হতে না হতেই আরেকটি খুনের সংবাদ ছড়িয়ে পড়ছে। স্থানীয়দের বিরাজমান দ্বন্দ্বের জের ধরে পৃথক পৃথকভাবে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটলেও বেশিভাগ মানুষই ভীতির মধ্যে রয়েছে। কুষ্টিয়ায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি দেখা দিয়েছে। বেশিরভাগই হত্যাকাণ্ড ঘটছে জমিসংক্রান্ত জের ধরে। ঘটনা যেভাবেই ঘটুক না কেন হারাতে হচ্ছে প্রাণ। এসব হত্যাকাণ্ডের মধ্যে দৌলতপুর উপজেলায় হয়েছে পাঁচটি। অপর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়া ইবি থানার শান্তি ডাঙ্গাগ্রামে। গত ২৭ এপ্রিল দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ইউনিয়ন এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছে এবং গত ৩০ এপ্রিল দৌলতপুর উপজেলায় প্রতিপক্ষের দেয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে দু’জনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন- চিলমারী গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে আকতার মন্ডল এবং একই গ্রামের দবির মন্ডলের ছেলে দিনু মন্ডল।

গত ২৪ এপ্রিল নূর সালাম নামের এক প্রতিবন্ধীকে কে বা কারা গলাকেটে গুরুতর আহত করে দৌলতপুরের সোনাইকুন্ডি উত্তরপাড়া জামিয়াতুল মাদ্রাসার পাশের রাস্তায় ফেলে রাখে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১ মে রাতে তিনি মারা যায়। নূর সালাম এলাকার শুকুর মন্ডলের ছেলে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত একই এলাকার আবুল বাসারের ছেলে মাসুম রানাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। গত ১ মে কুষ্টিয়া ইবি থানার শান্তি ডাঙ্গা গ্রামে ছোট ভাই শহিদুলের শিল (পাথর) আঘাতে বড় ভাই রাশিদুল নিহত হয়েছে। পানির মটর চুরি হওয়া সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে ছোট ভাইয়ের শিল (পাথর) এর আঘাতে বড় ভাই ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।

গত ২ মে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে জোড়া হত্যার রেশ না কাটতেই ফের জোড়া খুনের ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার। পূর্ব শত্রুতা ও জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাকির মোল্লা নামে একজন কৃষক নিহত হন। নিহত জাকির মোল্লা কল্যাণপুর এলাকার আরব মন্ডলের ছেলে। এছাড়া অপর হত্যাকাণ্ডটি কুষ্টিয়া দৌলতপুর পূর্ব ফিলিপনগর গোলাবাড়িয়া নদীর কিনারে বালুচরে বালিচাপা দেয়া লাশ পাওয়া যায়। নিহত ব্যক্তির নাম মারুফ হোসেন। সে দৌলতপুর মন্ডলপাড়ার আশালত হাজীর ছেলে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম জানান, স্থানীয়দের বিরাজমান দ্বন্দ্বের জের ধরে পৃথক দুটি ঘটনায় এসব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। আমরা এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। এছাড়া এসব হত্যাকাণ্ড ও উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। হত্যাকারীরা আইনের হাত থেকে কোনোভাবেই রেহাই পাবে না।