টিএমএসএস কর্মকর্তাদের দাবি

করতোয়া নদীর জায়গা দখল হয়নি

প্রকাশ : ০৯ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আজাহার আলী, বগুড়া

বগুড়া শহরের টিএমএসএস বিনোদন জগতের কাননবালা ও কাঁঠালতলা ঘাটের শাখারিয়া ঈদগাঁ মাঠ সংলগ্ন করতোয়া নদীর সিএস মতে মাপযোগ করে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন, জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং টিএমএসএস-এর সার্ভেয়ার দিয়ে এ সীমানা নির্ধারণের পর সেখানে সীমানা খুঁটি বসানো হয়। বসানোর কয়েকদিন পর এই খুঁটি রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা তুলে ফেলে দেয়। টিএমএসএস-এর কর্মকর্তারা বলেছেন, করতোয়া নদীর কোনো জায়গা দখল করেনি।

জানা যায়, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা টিএমএসএস-এর বিরুদ্ধে করতোয়া নদীর জায়গা দখলের অভিযোগ উঠে। দীর্ঘদিন ধরে এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে টিএমএসএস কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে করতোয়া নদীর সিএস মূলে সীমানা নির্ধারণের জন্য জানান দেয়। কিন্তু সীমানা নির্ধারণ না হওয়ার কারণে টিএমএসএস-এর কিরুদ্ধে করতোয়া নদীর জায়গা দখলের অভিযোগ থেকেই যায়। এসব অভিযোগের বিষয়ে টিএমএসএস থেকে বলা হয়, সরকারের বা নদীর কোনো জমি দখলে নিয়ে কোনো কাজ সম্পাদন করেনি। টিএমএসএস নিজস্ব জমিতে কাজ করে যাচ্ছে। নদীর জমি দখলের বিষয়ে সরকারি অফিসে কথা চাউর হয়ে উঠলে গত মার্চ মাসের শেষ দিকে করতোয়া নদীর বিভিন্ন স্থানে অবৈধ দখল রোধে টিএমএসএস বিনোদন জগৎ এর কাননবালা ও কাঁঠালতলা ঘাটের শাখারিয়া ঈদগাঁ মাঠ সংলগ্ন এলাকায় নদীর সীমানা পরিমাপ করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়া কর্তৃক নোটিশের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও টিএমএসএস-এর যৌথ পরিমাপে সীমানা জটিলতা নিরসন করে করতোয়া নদীর সিএস নকশা অনুযায়ী দুটি পৃথক সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়। সীমানা পিলারটি ছিল রড ও সিমেন্ট দিয়ে তৈরি শক্ত খুঁটির। সীমানা পিলার স্থাপনের পর নদীর জায়গা যেন অক্ষত থাকে, সে বিষয়ে এলাকার সবাই উপস্থিত জনসাধারণকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলাও হয়। নদীর পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে ময়লা-আবর্জনাও যেন ফেলা না হয়, সে বিষয়েও বলা হয়। এ ঘটনার পর ৩ মে রাতের কোনো এক সময় সীমানা পিলার দুটি কে বা কারা তুলে ফেলে দিয়েছে। দুটি সীমানা পিলার টিএমএসএস জমির পাশ থেকে তুলে ফেলে দুর্বৃত্তরা। সীমানা খুঁটি তুলে ফেলে দিয়ে নদীর সীমানা নিয়ে আবারও জটিলতা দেখা দেয়। সীমানা খুঁটি তুলে ফেলার ঘটনায় অজ্ঞাতনামাদের নামে টিএমএসএস থেকে বগুড়া সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেছে। এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে চার দিনব্যাপী যৌথ পরিমাপের শ্রম প- করে মুছে দেয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিচারব্যবস্থা নেয়ার লিখিত আবেদন করেছে টিএমএসএস। রাতের অন্ধকারে খুঁটি তুলে ফেলার ঘটনাকে নাশকতামূলক বলে মনে করছে টিএমএসএস।

টিএমএসএস-এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপিকা ড. হোসনে আরা জানান, বগুড়ার করতোয়া নদীর বিতর্কিত সীমানায় জেলা প্রশাসন, জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং টিএমএসএস-এর সার্ভেয়ার দ্বারা সার্ভে করে নির্ধারণ করা হয়। নির্ধারণের পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে টিএমএসএস-এর জায়গায় নদী দেখা যায়নি। সার্ভেয়াররা নদীর জায়গা সার্ভে করে সীমানা খুঁটি বসিয়ে দেয়। তাতে করে টিএমএসএস জমি বা ভূমি দখলের অপবাদ থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু সেই খুঁটি রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা তুলে ফেলে দেয়। এতে করে টিএমএসএসকে আবারও দোষারোপের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। তাছাড়া টানা চারদিন ধরে সীমানা নির্ধারণ করা হলো, সে শ্রমও মূল্য থাকল না। তিনি বলেন, টিএমএসএস নদীর কোনো জায়গা দখল করেনি। যদি টিএমএসএস-এর মধ্যে কোনো জমি থেকেই থাকে, তাহলে সেটি ছেড়ে দেবে। কিন্তু সেটি আমাদের সিএস ও অন্যান্য কাগজ মূলে দেখানো হোক, যে কতটুকু নদীর জমি।