বরখাস্তের পরও নিয়মিত বেতন নিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক

প্রকাশ : ০৯ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কাজী বাবলা, পাবনা

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফসার আলী রানা আর্থিক দুর্নীতি ও নানা অনিয়মে অভিযুক্ত হওয়ায় চূড়ান্তভাবে বহিষ্কৃত হওয়ার পরও নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় এক যুগ আগে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড প্রধান শিক্ষক আফসার আলী রানাকে বরখাস্ত করেন। কিন্ত বরখাস্তের তিন বছর পর থেকে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতা এবং রাজনৈতিক চাপে প্রধান শিক্ষক নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। এ ব্যাপারে দিলপাশার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. শাহাদাত হোসেন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

লিখিত অভিযোগ ও অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক আফসার আলী রানা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নানাভাবে অর্থ আত্মসাৎ শুরু করেন। ২০০৪ সালে আয়া পদে শম্পা খাতুন নামে এক নারীকে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ১০ লাখ টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। নিয়োগ ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় তিন মাস পরে শম্পা খাতুন চাকরিচুত্য হয়।

একপর্যায়ে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটি প্রধান শিক্ষকের এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করেন। শিক্ষা বোর্ডের তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এরপেক্ষিতে ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর আপিল অ্যান্ড আরবিট্রেশন কমিটির সভায় প্রধান শিক্ষক আফসার আলী রানাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হয়। এরপর থেকে ওই প্রধান শিক্ষকের বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেন ম্যানেজিং কমিটি। এদিকে বেতন-ভাতা বন্ধ হওয়ার পরে আফসার আলী রানা শিক্ষা বোর্ড বরাবর বেতন-ভাতা চালু করার জন্য আবেদন করেন। অবশেষে প্রধান শিক্ষক হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। রিট শুনানিতেও বেতন-ভাতা প্রদানের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি হাইকোর্ট। এ অবস্থায় ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে তৎকালিন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান মন্টু মারা যান। পরে দিলপাশার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার ঘোষ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। অশোক কুমার ঘোষ সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে ২০১৪ সালের আগস্ট মাস থেকে প্রধান শিক্ষককে বেতন-ভাতা প্রদানের রেজুলেশন করে ব্যাংকে জমা দেন। তবে ব্যাংক কর্মকর্তা শিক্ষা বোর্ডের আদেশ ছাড়া বেতন-ভাতা প্রদান করতে রাজি হয়নি। পরে রাজনৈতিক চাপে বেতন প্রদান করতে বাধ্য হন ব্যাংকের কর্মকর্তা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আফসার আলী রানা ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, এসব বিষয়ে আমি সাংবাদিকদের জানাতে বাধ্য নই। এ পর্যয়ে তিনি অভিযোগকারীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অশোক কুমার ঘোষ বলেন, এডহক কমিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা বোর্ড প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করেছিল।