ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কেশবপুরে কপোতাক্ষ ফিউচার পার্ক

কেশবপুরে কপোতাক্ষ ফিউচার পার্ক

যশোরের কেশবপুরের সাগরদাঁড়ি মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদের গা ঘেঁষে এক একর জমির ওপর গড়ে ওঠা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব লীলাভূমির নাম কপোতাক্ষ ফিউচার ওয়ার্ল্ড পার্ক। আম বনের ভেতর প্রকৃতির অকৃপণ রূপ-লাবণ্যে ঘেরা এই পর্যটন কেন্দ্রটি। এরই মধ্যে পার্কটি আশপাশের জেলার মানুষের চিত্তবিনোদনের অন্যতম স্থানে পরিণত হয়ে উঠেছে। কিন্তু এলাকার একটি স্বার্থান্বেষী মহল সম্ভাবনাময় পার্কটির ক্ষতিসাধনে লিপ্ত থাকায় এর উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামের সমাজসেবক মিজানুর রহমানের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল এলাকায় একটি সুন্দর পার্ক করার। সে লক্ষ্যে তিনি যশোর পুলেরহাট সড়কের মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মভূমি সাগরদাঁড়ি গ্রামের নির্জন পল্লির কপোতাক্ষ অববাহিকায় পার্কটি স্থাপনে কাজ শুরু করেন। ২০১৬ সালের ৭ ডিসেম্বর কেশবপুরের তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ রায়হান কবীর পার্কটির উদ্বোধন করেন। মিজানুর রহমান তার জীবনের সব অর্জন দিয়ে মানুষের চিত্তবিনোদনের অন্যতম স্থানে পরিণত করার লক্ষ্যে এর সৌন্দর্য বন্ধনে কাজ করে যাচ্ছেন। পার্কটি ছায়াযুক্ত স্থানে হওয়ায় দর্শনার্থীরা সহজেই মুগ্ধ হন, প্রেমে পড়েন শীতল প্রকৃতির এই লীলাভূমির। এখানকার নৈসর্গিক প্রাকৃতিক লাবণ্যভরা বিভিন্নœ স্পট প্রস্তুত রয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য। প্রতিদিন হাতছানি দিয়ে ডাকছে ভ্রমণ পীপাসু মানুষদের। সম্পূর্ণ আম গাছে ঘেরা সুশীতল এ পার্কে রয়েছে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের সৃষ্ট মেঘনাদবধ কাব্যগ্রন্থসহ কবির আবক্ষ মূর্তি, নাগরদোলা, বাঘ, জিরাফ, উটের মূর্তি। স্লিপিং চেয়ার, দোলনা, জিপলাইন টাওয়ার। রয়েছে বিশ্রামাগার, পিকনিক স্পট। পার্কটিতে পিকনিক, পুনর্মিলনীসহ যেকোনো ধরনের সভা-সমাবেশের আয়োজন রয়েছে। এই পার্কে প্রবেশ করেই কাঠের ব্রিজ পার হয়ে যাওয়া যায় কপোতাক্ষ অববাহিকায়। কপোতাক্ষের হিমশীতল বাতাস, যা সহজেই আগত দর্শকদের মুগ্ধ করবে। সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পার্কটি দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। এর প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। শিশুদের বিভিন্ন রাউন্ড উপভোগের জন্য ৫ থেকে ১০ টাকা দিয়ে টিকিট কাটতে হয়।

পার্ক মালিক মিজানুর রহমান বলেন, পার্কটি পর্যটকদের আকর্ষণীয় করতে বিগত ৬ বছর ধরে তিনি সৌন্দর্য বর্ধনে কাজ করে যাচ্ছেন। পার্কে ভবিষ্যতে রাইট ক্যাভেল কার, স্পিডবোট, বিশ্রামাগার ও সভা-সমাবেশের মিলনায়তন করার পরিকল্পনা রয়েছে। কপোতাক্ষ নদের পাড়ে করা হবে পাকা ঘাট। তিনি সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সহযোগিতা পেলে পার্কটি আরও সুন্দর করে সাজাতে পারতেন। তার পরও পার্কটির সৌন্দর্য বর্ধনে নিজের অর্থসম্পদের বিনিময়ে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। তবে এলাকার একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধনে বখাটেরা সম্ভাবনাময় এ পার্কটির ক্ষতিসাধন অব্যাহত রেখেছে। তারা পার্কের পাঁচিল টপকিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে বসার কাঠের চেয়ার, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ছবি ভাঙচুরসহ ময়ূর মূর্তি ও পাইপের কালার লাইট ভেঙে ক্ষতি সাধন করেছে।

এছাড়া, দুর্বৃত্তরা পার্কের টিউবঅয়েল, মাইকের ইউনিট চুরি করে নিয়ে গেছে। ঝাউগাছসহ অন্যান্য গাছ কেটে ক্ষতিসাধন অব্যাহত রেখেছে। যশোরের পুলেরহাট ভায়া কুমিরা সড়ক ও কেশবপুর সাগরদাঁড়ি সড়ক দিয়ে এ পার্কে যাওয়া যায়। কেশবপুর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার গেলে শেখপুরা জামে মসজিদ। এ মসজিদের পাশ দিয়ে পাকা সড়ক বেয়ে মাত্র ১ কিলোমিটার গেলেই পুলেরহাট-কুমিরা সড়কের পাশে পার্কটি অবস্থিত।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত